Monday, April 30, 2018

হঠাৎ বৃষ্টি

দিনের বেলায় সন্ধে নেমে এসেছে, কড়ক্কড়াত করে বাজ। ওই ওই ঝড় উঠলো, ফলওয়ালা বিশে ছুটে দড়ি এনে বাঁধতে গেলো, ওই একটা কাদের জামা উড়ে গেলো। দরজার পাল্লা গুলো দড়াম করে পড়ছে, মায়ের রান্নাঘরে আলো...একটা পায়রা উড়তে গিয়ে ভেবলে গেছে, তারপর এক দৌড়ে আমাদের বাড়ির কার্নিশে। ছেলেটা ছটফট করে ওঠে, এই ঝড়, অন্ধকার বৃষ্টিতে তো ও বাড়িতে থাকতে পারে না। 
" মা তোমার শশা, টমেটো কিছু এনে দিতে হবে? দাও না এনে দিচ্ছি।"
- ভিজতে যাবি বলে না? না আমার কিচ্ছু লাগবে না,তুই চানে যা। অফিস যেতে হবে না? মাছের ডিম ভেজেছি খেয়ে চান করতে যা। 
- আমি এক্ষুনি চলে আসবো তো, এক্ষুনি আসছি দাঁড়াও না।
বোতাম না আটকানো জামা গলিয়ে জুতো পরে সে, ছেলেটার মা দরজায় দাঁড়িয়ে বলতে থাকে এতো বাজ পরছে এ সময় কেউ বাড়ির বাইরে যায়? কথা বললে শোনে না....

বাইরে তখন তুমুল বৃষ্টি। রাস্তাঘাট ফাঁকা, দোকানগুলোয় শাটার নামিয়ে লোকে বৃষ্টি থামার প্রতীক্ষায়। ফুলওয়ালির ফুল গুলো ঝড়ে জলে রাস্তায় অঞ্জলি হয়ে পড়ে আছে, সব্জিওলার ট্রলিভ্যানে একা একা ভিজছে কুমড়ো, পটল, লালশাক। তুমুল হাওয়ায়, ঠান্ডা বৃষ্টির ঝাপটায় ফাঁকা রাস্তা ধরে ছেলেটা সটান হেঁটে যায়, সকলের অবাক চোখ, ঝোড়ো হাওয়ার দাপট উড়িয়ে। দূর থেকে রেডিওয় যাও পাখির মিউজিকটা বাজছে তখন.....

একটা ফুল গাছের ট্রলি একা একা ভিজছে, গাছ বিক্রেতা মাথা বাঁচাতে ব্যস্ত দূরে। গন্ধরাজ গাছের পাতায় মুখ নামিয়ে কী যেন বলে ছেলেটা....ফের এগিয়ে যায়। কে যেন ধমকে বলে, 'এই ছেলে বাড়ি যা, বাজ পড়ছে এত, কেউ বাইরে ঘোরে?'
ছেলেটার আপাদমস্তক ভেজা, চশমার কাচ ঝাপ্সা, হঠাৎ একটা গাড়ির হর্ণে চমক ভাঙে, ফিরতি পথ ধরে......অনেকদূর এসে গেছে, অফিস যেতে হবে তো......

বাড়ি ফিরতে এক জোড়া উদ্বিগ্ন মুখ দরজা খুলে দেয়, "যা যা আগে চান করে নে ভালো করে, ফের জ্বর বাধাবি......"
এই জন্যই ছেলেটার পালানো হয় না আর।

No comments:

Post a Comment