Wednesday, June 15, 2016

আমাচু

এভরিথিং কামস উইথ প্রাইস কথাটা আমি আর নতুন করে কি বলব।  ব্লগ এ পাঠকের সংখ্যা বাড়ার বদলে যে কমছে সে কি আমি মূল্য দিয়ে খরিদ করিনি।  দিনের পর দিন ফুককুড়ি করে কাটাই , অফুরান সময় বরবাদ করি সেই মূল্যেই এটা কেনা। একটা  দিলাম।  একবার মাথায় ভূতচেপেছিল রূপকথা লেখার সে সময়কার। তেমন দাঁড়ায়নি তাও যারা পড়েন যদি একটু মতামত দেন।
******************************************************************************

 সে এক দেশ ছিল নাম সর্গিরি। সেখানে গোলা ভরা ধান ছিলো , খাল বিলে মাছ ছিল, মোবাইল এ টাওয়ার ছিল, ইন্টারনেট এ স্পিড ছিল, রাস্তায় জ্যাম, খানাখন্দ কিচ্ছুটি  ছিল না।  কিন্তু আমাচু  এর মনে সুখ ছিল না. থাকবে কি করে তার যে নির্বাসন চলছে। হয়ত ভাবছ  নির্বাসন দেওয়া হয়েছে বলে সে বেজায় বাজে ছেলে, ইস্কুলে পড়া  না করা, কুকুরের লেজ এ পটকা ফাটানো ছেলে। তাহলে বাপু রোসো  একটু, আগে পুরোটা বলি কেন এমন হলো তার।আমাচু এর দেশ গোরামুর এর অদ্ভূত এক নিয়ম ছিল, পড়াশোনা করে আমরা যেমন চাকরি বাকরি করি ওদের দেশে নিয়ম ছিলো রাজার সেনাদলে নাম লেখাতে হবে। সেই সেনাদলে তোমাকে যুদ্ধ করতে হতে পারে রাজার হয়ে, সে রাজা যতই ভুল করুক, কিচ্ছুটি  বলা যাবে না, কিংবা রাজার যা আদেশ দেবে তাই করতে হবে।ভাবো একবার।  তোমার ইচ্ছে তুমি গিটার বাজাবে তা না তোমাকে চাষ করতে যেতে বললো  রাজা।তোমাকে তাই যেতে হবে।আমাচু ছিলো  বেজায় ভিতু আর কুঁড়ে।  তাই রাজা তাকে হুকুম দিল 'যাও তুমি ওই পূব দিকের যে প্রকান্ড মাঠটা  আছে সেখানে গরু চড়াও'। সে বেচারা আর কি করে তাই গেলো  করতে।ভাবছ বুঝি গরু চড়ানো  মজার কাজ মোটেই তেমন না , প্রায় মরুভূমির মত কড়া  রোদ সেখানে। তারমধ্যে সাপখোপে ভরা জায়গা। তবু আমাচু মন দিয়ে করত. কারণ ও সত্যি যে আর কিচ্ছুটি  করতে পারেনা। প্রথম প্রথম গরুগুলো জঙ্গলে হারিয়ে যেত, যেখানে সেখানে গোবরের নাদা ফেলে একাকার করত, কিন্তু আস্তে আস্তে আমাচু শিখে নিয়েছে কি করে গরুগুলোকে এক জায়গায় রাখা যায়, কি করে গরুর দুধ বাড়াতে হয়।  গরুপ্রধান ও খুব খুশি। খালি সুখ নেই আমাচুর মনে, থাকেই বা কি করে,চারিদিকে একটা জনপ্রাণী নেই, কাহাতক গরুদের  সাথে কথা বলে তাদের যত্ন আত্তি  করে দিন কাটে।  এমন সময় একদিন জঙ্গল পেরিয়ে, তারপর যে বড় মাঠটা  আছে সে মাঠ পেরোলে  যে গ্রামটা আছে, যার নাম কিরিমুরু  সেখানের লোকেরা এদিকে ঘুরতে এলো।আমাচু তো ভারী খুশি। ওদের সাথে গল্প গুজব করে তবু কটা দিন ভালই কাটবে ভেবে। তা কাটলও কটা  দিন মন্দ না।আমাচুরের ব্যবহারে খুশি হয়ে সক্কলে জানালো যে ওকে কিরিমুরু গ্রামের সাথে যোগাযোগ রাখতেই হবে। এদিকে ওই জঙ্গলে তো ইন্টারনেট নেই, তবে উপায়?কারণ  ওই দলের সাথেই আসা এনাকিনি নামের মিষ্টি মেয়েটাতো ওর জন্যে অপেক্ষা করে থাকবে। আমাচু  তখন করলো কি কাঠকুটো জড়ো  করে একটা নৌকো বানালো।  তারপর অনেক কষ্টে মাঝে মাঝে গিয়ে এনাকিনির সাথে দেখা করে গল্প করে আসত। এদিকে হয়েছে কি , গরুপ্রধান আমাচুরের  এই এডভেঞ্চার টের  পেয়ে গেলো।  সে লোকটা ভারী হিংসুটে, সে রাজামশাই কে জানালো, আমাচু  নিয়ম ভেঙ্গেছে।ও ব্যাটা ভুলে গেছে যে এই দেশে যা কখনও  ঘটেনি তা করাই হলো অন্যায়। আমাচু  তেমন কাজ করেছে। নিজের সীমানার বাইরে ও কিনা পা রেখেছে তাও এতবড় স্পর্ধা আমাদের পথ না থাকায় নিজেই নিজের পথ তৈরি করেছে! এদিকে রাজা পড়লেন মুশকিলে।  আমাচুকে মেরে ফেলা যায়  বা নির্বাসন দেওয়া যায় কিন্তু আজকাল আবার রাজ্যে বিদ্রোহ দেখা যাচ্ছে এদিক সেদিক , যদি আমাচুর কথা তাদের কানে ওঠে মুশকিল হয়ে যাবে। রাজামশাই বুদ্ধি খাটিয়ে আমচুকে বলল 'সর্গিরি দেশে  গরু গুলো চড়ানো শুনেছি ভারী মুশকিল, তুমি তো এ কাজে বেশ দক্ষ হয়েছ তাই যাও ওই দেশে গিয়ে গরু চরাও'।আমাচু  পড়ল বিপদে। কি করে আর , এনাকিনি কে বলে গেল যত্ততাড়াতাড়ি পারে সে ফিরবে। দিন যায় রাত যায়, আমাচুর  ফেরার দিন আর আসে না। রাজা খালি বলে না না এখনি আসবে কি। সর্গিলি থেকে কিরিমুরু গ্রামে নৌকো করে যাওয়া যায় না। সে অনেক দূরের  পথ। মাঝে পাহাড়, নদী মরুভূমি, ঠান্ডা সমুদ্র সব পরবে।  এখন উপায়! শেষ মেস  আর না পেরে আমাচু নাইটেঙ্গেল পাখিটার কাছেযাবে স্থির  করলো ।  সেই যে নাইটেঙ্গেল পাখিটা, মনে আছে তো।  সারা রাত শিশিরে ভিজে যে বুকের উষ্ণতা দিয়ে রাজকুমারির জন্যে একটা লাল গোলাপ ফুটিয়ে দিয়েছিল।  সেই নাইটেঙ্গেল। সবাই তোমরা জানো  বটে যে সে মরে গেছিলো , আসলে উষ্ণতার দেবতা ওর কাজে খুশি হয়ে ওকে বাঁচিয়ে দিয়েছিল আর বর দিয়েছিলো  যে ও  হবে তাদের রাজা যারা এখনো ভালোবাসে। কারণ তাদের সবার থেকে উষ্ণতা নিয়েই নাইটেঙ্গেল প্রাণ ফিরে পেয়েছে।  আমাচু  জানে না কোথায় থাকে এই নাইটেঙ্গেল । আমাচু  বেড়িয়ে  পড়ল নাইটেঙ্গেলকে খুঁজতে। বড্ড শীত পড়েছে। আমাচু  গরু চড়ায় ,ওর কাছে গাড়ি ঘোড়া  কিছু নেই. কোথায় খুজবে নাইটেঙ্গেলকে। কিন্তু  নাইটেঙ্গেলকে আজ যে ওর বড্ড দরকার। আমাচু  পেলেট  নদীর ধারে  যে মস্ত ঝাঁকড়া গাছ আছে সেখানে গেলো।  সেখানে টুই পাখি আর টিটিটি  পাখি মন দিয়ে গান ধরেছে। কিচ কিচ পাখি ,ক্যাকাও এর সাথে কি একটা বিষয়ে গম্ভীর আলোচনা করছে। আসেপাশে আরো হাজারও পাখির মেলা। আমাচু  জিগ্গেস করলো তোমরা কেউ কিং নাইটেঙ্গেলকে দেখেছ? সব পাখি সমস্বরে জানালো কেউ দেখেনি। কেউ দেখেনি। আমাচু  তখন পিসিং সমুদ্রের ধরে বসে থাকা  সিগাল পাখি পককম  কে জিগ্গেস করলো "সী  গাল তুমি তো কত্ত পাখিকে দেখেছ যারা শীতকালে উড়ে যায় ওই দূর দেশে তুমি নাইটেঙ্গেলকে দেখোনি?' পককম  গম্ভীর ভাবে একখানা মাছ চিবুতে চিবুতে  জানালো সেও দেখেনি। মনের দুক্ষে আমাচু  গেলো  ঈভান পাহাড়ের চুড়ায় , কিন্তু সেখানে বরফে ঢাকা সব, কেউ কথাও নেই। আমাচু  আর কি করে ফিরতে লাগলো। খানিক দূর এসে ঠান্ডায় আমাচুর  নাকের ডগা অসার হয়ে গেলো। সস্তার টুপি  আর দস্তানা ভেদ করে কান আর হাত ঠান্ডা হয়ে যাচ্ছে। ছেড়া  জুতো  ভেদ করে বরফের কুচি ঢুকে যাচ্ছে পায়ের মধ্যে। খিদেয়  তেষ্টায়  ঠান্ডায় আমাচুর প্রায় বেঁহুশ অবস্থা তখন। হটাৎ সুইটুইটুই সুইটুইটুই করে ভেসে এলো একটা স্বর।কিং নাইটেঙ্গেলএসেছে! 'আমাচু  , ওঠো দেখো আমি এসেছি' আমাচু  খুশিতে ক্লান্তিতে কেঁদে ফেলল।
'কেঁদনা আমাচু , তুমি ভারী ভালো ছেলে আমি জানি। এনাকিনি তোমার অপেক্ষায় আছে যাবে না তুমি'?
আমাচু  কাঁদতে কাঁদতে জানালো এনাকিনির কাছে ফিরতে গেলে ওদের দেশের রাজা ওকে কয়েদ করবে।  রাজা কিরিমুরু গ্রামের সক্কলকে বশ  করেছে, তাই কেউ চায়না এনাকিনি আর আমাচুর  বিয়ে হোক। ওদের ওরা একসাথে থাকতে দেবে না. ও এনাকিনিকে সর্গিলিতে আনতেও পারবে না , রাজার সেনারা সীমান্ত পাহারা দিচ্ছে এখন উপায়। এনাকিনির কাছে ও কেমন করে পৌঁছবে ?
কিং নাইটেঙ্গেল  বলল ও একটা বর দিয়ে  আমাচুকে কে পাখি বানিয়ে দিতে পারে কিন্তু আমাচুকে ঠান্ডা পিসিং সাগর পেরোতে হবে। নাইটেঙ্গেল  পাখি বর দিয়ে খালি নাইটেঙ্গেল পাখিই বানাতে পারে। যদি আমাচু পিসিং সাগর পৌঁছতে  গিয়ে জমে যায় তবে নাইটেঙ্গেল কিছুই করতে পারবেনা।  তবে আরো একটা উপায় আছে।  এনাকিনি যদি খুব খুব মন দিয়ে চায় আমাচুকে  দেখতে তবে এনাকিনির উষ্ণতায় পিসিং সাগরের ঠান্ডা ও কেটে যাবে।  কিন্তু এনাকিনি কে এক মুহুর্তও অন্য দিকে মন দিলে হবে না, তাহলেই পিসিং সাগরের ঠান্ডায় আমাচু পাথর হয়ে যাবে। কিন্তু পাখি হয়ে পৌঁছলে এনাকিনি আমচু কে চিনবে কেমন করে? নাইটেঙ্গেল জানালো সে উপায় আছে কিরিমুরু গ্রামে পৌঁছনোর  পর ভয় না পেয়ে রাজাকে কাছে দাঁড়িয়ে জানাতে হবে রাজা অন্যায় করেছে, আমাচু তাহলেই মানুষ হয়ে যাবে, আর কিরিমুরুর লোকেরাও রাজার বশ  থেকে বেরিয়ে আসবে।  এদিকে এনাকিনি তো এমনিতেই সারাদিন মনমরা হয়ে থাকে আর আমাচুর  কথা ভাবে। আমাচু জানে , আমচু তাই এককথায় রাজি হয়ে গেল। নাইটেঙ্গেল বললো  'বেশ , আজ  তুমি এমনিতেই ক্লান্ত, গিয়ে ঘুমিয়ে পর, কাল সকালেই রওনা  দিও। পরের দিন সক্কাল বেলা আমচু দেখল সে নাইটেঙ্গেল  পাখি হয়ে গেছে। আর কি তর সয়।  উড়তে থাক উড়তে থাক। পাহাড় , নদী মরুভূমি পেরিয়ে আমচু এলো পিসিং সাগরের সামনে। চারিদিকে কনকনে ঠান্ডা হাওয়া  দিছে। বরফ পড়ছে  সমানে , সূর্যের নাম গন্ধ নেই কোথাও। মনে মনে বলল আমচু এনাকিনি আমি জানি তুমি চাইছ আমি যাতে আবার কিরিমুরু গ্রামে তোমার সামনে হাজির হই। তুমি খালি সেটাই চাও, আর বলো মনে মনে ঘিরে থাকো  যাতে পিসিং সাগরের ঠান্ডা দৈত্য আমায় না ছুঁতে পারে। এনাকিনি শুনতে  পেল সেকথা সেইই দূর কিরিমুরুতে বসেও।  এক মনে যা বলা হয় তাই ঠিক পৌঁছে যায় সে তো তোমরা জানই। এনাকিনি তখন দূরের  জঙ্গলের পাশে গিয়ে একমনে বলতে লাগলো 'আমাচু  যেন পৌঁছে  যায়, পিসিং সাগরের ঠান্ডা দৈত্য যেন ছুঁতে  না পারে আমাচুকে '। এদিকে হয়েছিল কি রাজামশাই তো সবাইকে বশ করে রেখেছিলো  , এনাকিনির মা বাবাকেও বশ করে রেখেছিল।  এনাকিনি যখন একমনে ডাকছে , এনাকিনির মা এসে এনাকিনিকে খুব বকাবকি করতে লাগলোকেন এনাকিনি কাউকে কিছু না বলে বাড়ি থেকে বেড়িয়েছে , কেন এখানে আমাচুর  জন্যে কাঁদতে এসেছে, এনাকিনি কি জানে না, আমাচু  খারাপ, আমাচুকে নিয়ে সবাই তামাশা করে। গরুপ্রধান এর ছেলেই তো আছে, এনাকিনিকে বিয়ে করার জন্যে।তাছাড়া আমাচু রাজার প্রিয় না , আমাচু  খারাপ কারণ আমাচু  যা নিয়ম তা না মেন মেনে এনাকিনিকে ভালোবেসেছে। এনাকিনি এইসব কথায় হটাৎ মনসংযোগ  হারিয়ে ফেলে। এদিকে আমাচু  মাঝ সমুদ্রে তখন  , চারিদিকে হু  হু করা ঠান্ডা বাতাস। ঠান্ডার দৈত্যটা ছো মারবে বলে এগিয়ে আসছে। আমাচুকে ঘিরে থাকা উষ্ণতা ক্রমশ কমে যাচ্ছে। আমাচুর  ডানা  পাথর হয়ে যাচ্ছে।
'এনাএএএকিনই' মনে মনে চেঁচিয়ে  উঠলো আমাচু। আমাচু  আর পারছে না। সব শক্তি একাকার করে ঠান্ডার দৈত্যের হাত এড়াতে চাইছে আমাচু। যে গাছটার  নিচে বসে এনাকিনি আমাচুকে ডাকছিল সেই গাছটা ফিসফিসিয়ে বল , 'এনাকিনি, এনাকিনি ,মিষ্টি মেয়ে , আমাচুকে ঘিরে রাখো। তোমার মা এখন রাজার বশে আমাচু  এসে সব ঠিক করে দেবে।' এনাকিনির হুশ ফিরল , তারাতারি আবার চোখ বুজে আমাচুকে ডাকতে থাকলো। আমাচু তখন প্রায় দৈত্যের কবলে। আমাচুর  শরীর ঠান্ডা হয়ে গেছে। কিন্তু তখন পাথর হয়ে যায়নি আমাচু। এনাকিনির উষ্ণতা একটু একটু করে জ্ঞান ফিরিয়ে আনলো আমচুর , তলিয়ে যাবার আগে উড়ে চলল কিরিমারুর পথে আবার। কিন্তু ছোট্ট পাখি সে এখন, এনাকিনির উষ্ণতায় এখনো ঠান্ডার দৈত্য ওকে পাথর করে দেয়নি , কিন্তু ছোট্ট শরীরে আমাচু  আর বল পাচ্ছে  না। আমচুর ঘুম পাচ্ছে ,  ৩দিন কিচ্ছু  না খেয়ে সে উড়ছে এখনো একদিনের রাস্তা বাকি। এমন সময় আমাচু দেখল একটা পীচ ফল কে যেন ওর ঠোটে ধরল। অবাক হয়ে তাকিয়ে দেখে একঝাঁক  পাখি , ওরা এইসময় শীতের দেশ থেকে গরমের দেশে যায় ওদের নাম  দিংকানো।  ওদেরই  একজন  একজন  নিজের ঠোট  থেকে বাড়িয়ে দিয়েছে একটা ফল।
'আমাচু  ছোট্ট  পাখি , তোমার কথা আমরা জানি ,আমরা সবাই আছি তোমার সাথে'  ---কিচির মিচির করে জানালো ওরা।
আরও একদিন এক রাত উড়ে গোরামুর দেশে পৌঁছলো  যখন অর আর একফোটাও শক্তি বাকি নেই এইরত্তি শরীরে। কিন্তু আমাচুর  ওই বন্ধুরা, দিংকানোরা  তারপর  গোরামুর  দেশের গাছেরা  আমচুকে ভোলেনি।  গাছের দিল আশ্রয়, পাখিরা দিলো  খাবার, নদী দিল জল।  আমাচু  সুস্থ হয়ে সোজা উড়ে গেলো  রাজার কাছে।  একরত্তি পাখিটা গলা ফুলিয়ে জানিয়ে দিল রাজাকে রাজা আমাচুর  সাথে অন্যায় করেছে। সে এনাকিনিকে বিয়ে করবে আর কিরিমুরু গ্রামেই থাকবে। রাজা ওই খুদে পাখিরসাহসে ভয় পেয়ে গেল। যেই না ভয় পাওয়া, সব লোকেরা রাজার বশ মুক্ত হয়ে গেল, আর আমাচুও মানুষ হয়ে গেল আবার। তারপর আর কি দুজনে বিয়ে করে একসাথে সুখে দিন কাটাতে লাগলো। কিরিমুরু গ্রামের সক্কলে সে বিয়ের ভোজে হাজির ছিল। আর এসেছিল দিংকানোরা , টুই পাখি আর টিটিটি  পাখি কিচ কিচ পাখি ,ক্যাকাও ,পককম।  কিং নাইটেঙ্গেল এর এর অবশ্য ভোজ এ আসা হয়নি ওকে আর এক জায়গায় যেতে হয়েছিল কিনা । সে অন্য গল্প ,আমাচুর ভোজের খাওয়া  শেষ হোক তারপর বলব তোমাদের।



Tuesday, June 7, 2016

একলা পথে ...(বাকিটুকু)

শুরুতেই মাপ চাইছি , অনেকদিন পর আবার পরের পর্ব লিখছি তাই। বেশি বাকি নেই , আগেই শেষ করা উচিত ছিলো।

******************************************************************

 ...আবার একটা মিথ্যে প্রতিশ্রুতি দিয়ে চলে এলাম। নদীর ঘাটে গিয়ে দেখি তখনো লোক হয়নি তাই এখন ভটভটি ছাড়বে। না নদীর ধরে ঘটে একা বসে রইলাম। আমার তাড়া নেই।  একজন দুজন করে লোক হচ্ছিলো। সব ৪-৬ জনের দোল. আমি একা তাই ভরসা আছে কথাও না কথাও ঢুকে যাব।  এক দলের এক মাঝবয়েসী লোক , বেশ একটা নেতা নেতা ভাব আছে,  দেখি মাঝির সাথে দরাদরি করতে শুরু করলো। মাথা পিছু ১৫ টাকার পরিবর্তে ২৫ টাকা করে দিলে সে আমাদের নিয়ে যাবে।নেতামষায় আর তার সঙ্গী ভদ্রলোক দুজনেই খানিক নেশা করেছেন , তবে নেতা মশাই এর অবস্থা কিঞ্চিত অস্থিতিমূলক।ভটভটিতে এক মহিলাও ছিলেন , আলগা চটক আছে। তাকে দেখে তো নেতা মশাই এর নেশা এবং অস্তির অবস্থা বেড়ে গেলো। হটাৎ লম্বা হয়ে নৌকোয় শুয়ে পড়লেন। সঙ্গী বললেন " কিরে কি হলো? তুই ঘুমোনোর জন্য এলি নাকি " ?
-তুই থাম।  বরং একটা গান কর।
সঙ্গী হাঁ। নেতা মশাই আবার বললেন , " জানিস না রাজেশ খান্না যখন শুয়ে ছিলো শর্মিলা ঠাকুর গান গাইছিলো '!
কে যে রাজেশ খান্না কে যে সর্মিলা ঠাকুর পুরো ঘেঁটে ঘ।  সঙ্গীর অবস্থা করুন। মেয়েটি মুচকি হাসলো। নৌকো এগিয়ে চলেছে।ওদিকটা বাংলাদেশ এদিকটা ভারত। আমার বাংলাদেশ নিয়ে তেমন কোনো টান বা  নস্টালজিয়া নেই , তবু অদ্ভূত একটা মনের ভাব হলো।  খানিক দূরে তিন নদীর মোহনা। জলঢাকা , ইছামতি আর একটার কি নাম ছিল ভুলে গেছি। খানিক নদীর উপর ঘুরে ফেরা। চা খেতে সেইচা এর দোকানেই আবার।  খিদে পাচ্ছিল , কিন্তু কোনো খাবারই মন:পূত  হচ্ছিলনা। আরো খানিকক্ষণ থাকতে ইচ্ছে করছে।  ওদিকে মেঘ করেছে  খুব।  থাকি আর একটু? বৃষ্টি হলে ভিজব না হয়। এই করে আরো খানিকক্ষণ কাটিয়ে বাইক স্টার্ট করার পর পরই তিনি এলেন। আকাশ ভাঙ্গা না হলে বেশ ঝমঝমিয়ে। তীরের ফলার মত বিধছে গায়ে।  তবু দাঁড়াতে ইচ্ছে করছে না।  রাস্তায় লোক কমে গেছে। গাছগুলো মাথা নেড়ে নেড়ে এনজয় করছে দিব্বি , ব্যাটা থাকতোরা এক জায়গায় দাঁড়িয়ে। হু হু বাওয়া , আম্নুষ হওয়ার মজা মন্দ নাকি। দেখ দেখ কেমন সাঁই সাঁই  করে চলেছি আর  বিভিন্ন জায়গার বৃষ্টি দেখতে দেখতে ভিজতে ভিজতে যাচ্ছি।
কিঞ্চিত পরেই অবিশ্যি এ সুখ আর ছিলো না , বৃষ্টির দাপট বাড়ল , আমার পক্ষিরাজ থামলো।  গাড়ি থামিয়ে আপাদমস্তক ভেজা অবস্থায় এক কা এর দোকানে চা চাইলাম। লোকটা কিরম সন্দেহ জনক দৃষ্টিতে দেখছিল , যেন এরকম ভিজে কেউ যায়না।  যত্তসব জ্বালাধরানো ফোস্কার দল।
উহ বেজায় ঠান্ডা রে বাবা।  কাঁপতে কাঁপতে  রওনা দিলাম।