মানুষ দেখতে আমি ভালোবাসি। ঋকানন্দ খানিক অসামাজিক হলেও মাঝে মাঝে জমেও যায় কোথাও কোথাও। আজ বাজারে যেমন। ডাব অমিল হয়েছে খানিক এখন, এদিকে মায়ের পথ্যে ডাব চাই। খানিকদূর যাওয়ার পর এক বুড়ো মানুষের ভ্যান মিলল। খান দুই ডাব পড়ে আছে, নারকেলই বলা যায় তাদের। তা আমার উপায় নেই, নারকেলই সই। "নিয়ে যা নিয়ে যা, আমিও গুটিয়ে বাড়ি যাই। আমার হয়েছে জ্বালা। বিয়ে করে ফেঁসে গেছি একদম। ছেলেরা বসে আছে তাতে কিছু না, আমি বোস্থাকলেই যত রাগ।"
এই রে, গোলমেলে পরিস্থিতিতে পড়ে গেছি। সান্ত্বনা দিয়ে বললাম, "আহা চাচা রাগ করো কেন, রাগারাগি করে কী লাভ। "
তাতে রাগ মোটেই কমল না, "আমিও বলে দিয়েছি, বেশী দেখলে, ছেড়ে দিয়ে আরেকটা বিয়ে করে নেব। মেয়ে দেখা আছে। থাক পড়ে।"
ভক্তিয়ে কেঁপে গেলাম। সত্যি! এরকম তেজ, বীরত্বের কাহিনী স্রেফ শুনেছি আজ স্বচক্ষে দেখে মুচ্ছো যাবার মতই উপায়। তাছাড়া চাচার স্ট্যামিনাও তো বিস্তর!
- বলে দিয়েছ চাচা?
-নয়ত কি?
-আহা যাবে কোথায়, খাবে কি?
- সে হেথা হোথা পড়ে থাকবো!
তবে? অত ভাবনার বোঝা বইব নাকি? এই দুর্দমনীয় বীরকে নমো করে মানে মানে এগিয়ে গেলাম। একটা বাচ্ছা ছেলে মুসাম্বি বেচ্ছে সাইকেলে করে। বেচায় যে খুব মন আছে তা না। হালকা গোঁফের রেখা দেখা গেলেও বাচ্ছাই, তাই খানিক দাঁড়িয়ে কেনা কাটা করা গেল। মুসাম্বির ভালোমন্দ আমি বুঝি না। তা দেবে দিক গা।
জানা গেল সিক্সে পড়েন তিনি। যদিও সিক্সে গোঁফের রেখা দেখাটা আশ্চর্য বটে, সে যা হোক। বললাম, তা পড়াশোনা নেই, বেরিয়েছিস যে।
-ইস্কুল তো বন্ধ।
- তাতে কি বাড়িতেই পড় না হয়। কি আর করা যাবে।
খুব গম্ভীর গলায় বলল," এই বাজারে আর পড়াশোনা"।
আমিও ঘাড় নাড়লাম, সত্যিই তো। ও বাবা, তারপরেই ব্যাটা ফিচেল হাসি হেসে বলে, "করোনার সুবিধেটাও নিয়ে নিই "।
বুদ্ধিটা ক্লায়েন্ট ম্যানেজার এর উপর এপ্লাই করবো কিনা ভাবছি।