ফেসবুক এখন মোটামুটি মনোপলি বাকি , বিবাহ কিংবা মৃত্যু , পোস্ট দিয়ে খুন তো তুশ্চু , লোকে ফেসবুকে সেরা গ্রুপ পিকনিক প্রতিযোগিতা অব্দি নামিয়ে দিচ্ছে। বাঙালির জীবনে দুটো জাতীয় দাবি, অম্বল আর লেখা। আমার মতো প্রতিভাবিহীন লোক ব্লগে পোস্ট নামিয়ে দিচ্ছে আর ফেসবুকে সাহিত্য কর্ম করবেননা , বই লিখবেন ও শ দুই কপি বেচবেন না এটা অন্যায়। তা ভালোর সাথে সাথে কিছু বাঁশ এসে টুকটাক খোঁচা মেরে যাচ্ছে বইকি। এই ধরুন কাগজের শিলালিপি ( শিলালিপি কি করে কাগজের হয় তা আমায় জিজ্ঞেস করে লাভ নেই, আমার বুদ্ধি ওই মুরগির লেভেলের ) গ্রন্থটির জনপ্রিয় লেখক কে এড়িয়ে আপনাকে মেলায় যেতে হবে। দেখা হলেই ভদ্রতা করে হলেও বইটা কিনতে হবে , সে আপনি পড়তে চান বা না চান। এ ছাড়াও আছে , যে সারাবছর প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে বুক ফাটিয়ে লিখেছে জ্বালাময়ী ভাষণ তার বই বের হচ্ছে নামি পাবলিশার থেকে এরম নানা বৈচিত্র্যে ফেসবুক সরগরম। বইমেলা এসে গ্যাচে।
কিছু কিছু লোক থাকে যাদের সব পুরোনো জিনিসই ভারী পছন্দ , আমাদের সময় হু হু বাবা কেমন হ্যারিকেন ছিল জানিস , মশারি পুড়িয়ে দিয়েছি তাতে কি অধ্যাবসায়ের আরেক নাম ছিল ইত্যাদি। তা সেরকমই লোকের পোস্টও ফেসবুকে তাক লাগাচ্ছে। ' আমাদের সময় ধুলো ছিল আজ আর নেই আজ আর নেই , কোথায় হারিয়ে গেলো সোনালী ধুলো গুলো সেই। আজ আর নেই।' কিংবা কেউ লিখছে 'ধুলো ও হাঁচিদের দাবি মানতে হবে , ছোট বলে তাদের হটিয়ে দেওয়ার এ ভোগবাদী দুনিয়ার আক্রোশের তীব্র বিরোধিতা করলাম।'
হাঁচি বলতে মনে পড়লো , আমি বইমেলায় কত জন কে যে হেঁচে অন্যের গায়ে হাত মুছতে দেখেছি তার তুলনা বুঝি স্রেফ দুর্গাপূজোয় মেলে।
বছর দুই পর আমিও এবারে গেছিলাম বইমেলায়। আইন্সটাইনের অপ্রকাশিত সূত্রের একটি হলো যেকোনো স্থান , সঙ্গী বা সঙ্গীনীর উপর প্রভাবশীল । মানে গঙ্গার ধারে গার্লফ্রেন্ডের সাথে গিয়ে যেরকম লাগবে একা গিয়ে বা দঙ্গলে গিয়ে সেরকম লাগবে না । বইমেলার তা না কিন্তু । একবার বইএ মিশে গেলে আর কিছু লাগে না। তবে তেমন বইপড়ুয়া বন্ধু পেলে ঘোরাটা জমে যায়।