Monday, August 9, 2021

হাওয়াবদল

 আকাশী রঙের প্রজাপতিটা আজকেও এসেছে। রোজই এই সময়টা ওড়াউড়ি করে।ছোট কাঠবিড়ালিটা আজ আসেনি দেখছি। ট্রেনের হুইশেলের আওয়াজ শুনতে শুনতে চায়ে চুমুক দিতে দিতে দিতে সকাল দেখছি। সুভাষবাবু দাঁতন হাতে উল্টোদিকের সুনীলবাবুর সাথে গল্প জুড়েছেন। মার্টিনবাবু লুঙি পরে দাঁত মাজছে বারান্দায়, দুটো মেয়ে দু পাশে দাঁড়িয়ে,বউটা পাশে দাঁড়িয়ে দুধ নিচ্ছে গোয়ালার থেকে। ছোট গেটের পাহারাদারকে আশেপাশে দেখা যাচ্ছে না৷ দূর থেকে মাছওয়ালার আওয়াজ আসছে, "মাআআছ, বড় বড় মাছ"। একটা কেন্নো আপনমনে হেঁটে যাচ্ছে বারান্দা দিয়ে।


দিন কতক হল হল রাণীগঞ্জে এসে থাকছি। হাওয়াবদল আর কি। কোনো জায়গায় থেকেছি মানে, প্রতিটা ঋতু সেখানে অনুভব করেছি, তা না হলে স্রেফ গেছি বলা যায়, থাকা বলা যায় না। আমার হাতে অফুরন্ত যৌবন, টাকা আর সময় থাকলে আমি হয়তো সব পাহাড়, সব জঙ্গল সব দ্বীপে একটা বছর কাটাতে চাইতাম। যদিও চাইনা খুব একটা অত অনন্ত কিছুর লোভ নেই, সত্যি বলতে লাভও নেই। খুব কিছু বেশী থাকলে তার দাম অতটা থাকে না। এর আগে শীতে এসেছি, বসন্তে এসেছি এখানে, গরমে আসা হয়নি নিজেই কোভিডাক্রান্ত হয়ে পড়েছিলাম। শুনেছি গরম এখানে নাকি খুবই কষ্টের, তবু সে গরমের রৌদ্র রূপও আমার পছন্দের। খাঁ খাঁ করা প্রকৃতি আমার খারাপ কিছু লাগে না। ভালো লাগে বরং৷ যেমন এখন বর্ষায় চারদিক সবুজ দেখতে চোখের আরাম হয়। বর্ষাকালে গাছ পালাদের এই স্ফূর্তিটা কোলকাতায় বসে স্রেফ বোঝা যায়না। আমাদের বারান্দা গেলে টবের গাছগুলোকে  দেখলে একটু বোঝা যায় তবে শিকড় মেলতে না পারা গাছগুলোর আনন্দের প্রকাশ তো এরকম হবে না, একটু আটকানো হবেই। 


ঘুম ভাঙে অজস্র পাখির কিচিরমিচির আওয়াজে। পাশেই একটা অশ্বত্থ গাছ আছে, তাতে প্রচুর পাখি সাত সকালে আড্ডা জমায়। কিংবা বাজারহাট করে কিংবা পড়াশোনা করে। একটা টুনটুনি দোল খায় মাঝে মাঝে কলাগাছের উপর। যদিও চড়াই,ঘুঘু, ছাতারেই বেশী, তাও দোয়েল টুনটুনি কিংবা ফিঙের দেখাও মেলে। বারান্দায় আয়েস করে বসে বসে চা জলখাবার খেয়ে আমরা কাজে বসি, পুব দিকের বারান্দায় বসে প্রচুর মিষ্টি দেওয়া চা খায় শিবানি।  এখন শ্রাবন মাস চলছে কিনা, সোমবার করে প্রচুর গান বাজনা ভেসে আসে রাত অব্দি। মসজিদের দিক থেকে আজানের আওয়াজ ভেসে আসে। 


ছুটির দিনে বাজার যাই আসলে ফুডওয়াক করতে। এ অঞ্চলে লস্যি, রাবড়ি, কালাকাঁদ, কচুরি, জিলিপি,চাট এসব খুব মেলে। খেতেও তেমন হয়। আমরা চারটে কাজ নিয়ে বাজারে গেলে পাঁঁচবার থামি, কোনো দোকানে হয়তো টাটকা প্যাঁড়া, কোনো দোকানে, লস্যি, কোনো দোকানে জিলিপি কচুরি,কোথাও এক ভাঁড় রাবড়ি। বাজারটা জমজমাট, শতকরা নব্বই ভাগ দোকানই অবশ্য অবাঙালীদের হাতে। ফলের দোকান, তালাচাবি বানানোর জায়গা, মশলার গন্ধ, টোটোওয়ালাদের হাঁকডাক সব মিলিয়ে বেশীরভাগ সময়ই জমজমাট। মুচির দোকানের সামনে অকাজের লোক উবু হয়ে বসে, মিষ্টির দোকানে ছেলের হাতে দই এর ভাঁড় ধরিয়ে মা মুখময় আনন্দ নিয়ে বসে। মাংসের দোকান বেশীরভাগ মুসলমানদের চালিত। ছোট জায়গা মোটামুটি পরিচিতি তৈরী হয়ে যায়। রাত হলেই ম্যাজিকের মতো সব শান্ত। একেকদিন সন্ধ্যে পার করে  বেরোলে দেখি, বেশীরভাগ দোকান বন্ধ, শুধু খাবারের ঠেলা গুলোর সামনে ভীড়, পুরোনো বড় বড় বাড়ি গুলো সকালে ভীড়ের আড়ালে লুকিয়ে থাকে এখন স্বমহিমায় দাঁড়িয়ে আছে এইই বড় দেউড়ি, কারুকাজ করা থাম। কোনো সিঁড়িতে বসে মাতাল। ভিখারীটা কম এখানে। তারা মূলতঃ দোকান থেকেই ভিক্ষে আদায় করে খেয়াল করেছি। 


অনেকটা জুড়ে ক্যাম্পাস, মেইন্টেন্যান্স নেই বলে চারিদিকে ফাটাফুটো। এই বর্ষায় সেইসব ঢেকে দিয়েছে শ্যাওলা আর ফার্ণ এর পোশাক। আমাদের কোয়ার্টারের সামনেই একটা লেবু আর জুঁই ফুলের গাছ আছে,  ফুলের গালিচা বিছিয়ে রাখে ঢোকার মুখে আর লেবু পাতার গন্ধ আনে বিকেলের বাতাস। অপুকে হরিহর বলেছিল না হাঁ করা ছেলে, আমি অমন হাঁ করা খানিক। এখনো পর্যন্ত আমার বিস্ময় কাটেই না ওই যে পাশের বাড়ির ভাঙা কার্ণিশে মোটা মোটা রোঁয়া নিয়ে শ্লথ গতিতে হেঁটে চলেছে শুঁয়োপোকাটা, ছোটবেলায় যেটাকে কতবার কাঠিতে জড়িয়ে জ্যান্ত কবর দিয়েছি (কবর দিয়ে আবার একটা ক্রশ বানাতাম, চিতা টিতা জ্বালানো শক্ত আর ঝামেলার কিনা, তার থেকে খ্রীষ্টান হওয়া সোজা। মুসলমানেরা ক্রশ দেয় না,  ফলে তেমন সহজ জমকালো পারলৌকিক করার উপায় থাকে না কিনা) সেটা নাকি ওই আকাশ নীল প্রজাপতিটার ছোটবেলা!! ভাবা যায় না এইবারের বর্ষায় এসে দেখছি দেবদারু গাছ গুলো বেড়ে গিয়ে পাঁচিলের মতো হয়ে গেছে পিছনের দিকটায়। বেলা পড়লে পুবের বারান্দাটা ভারী অন্যরকম হয়ে যায়। দেবদারু গাছ গুলো নিশ্চুপে দাঁড়িয়ে থাকে, দু চারটে কাক, ছাতারে  অশ্বত্থের ডালে কিংবা নারকেল গাছে বসে৷ পায়রাগুলো একটু মানুষ ঘেঁষা তাই কার্নিশেই বেশী বসে। এই বারে এসে একটাও হনুমান দেখলাম না। চারিদিকটা একদম নিশ্চুপ। বিকেল গড়িয়ে গেলে নিজের কানের সোঁ সোঁ শব্দও শোনা যায় যদি সেদিন ঝিঁঝিঁ কিংবা ব্যাঙ না ডাকে। ইতোয়ারি মোড়ের মশলাপট্টির গন্ধ, বাজারের হাঁকডাক, টোটোওয়ালাদের ধমকানি মিলিয়ে যে ঘূর্ণিটা ওঠে সেটা পেরোলেই ষাঁড়ের গোবর, শুয়োরের নোংরা,  ইজের আর ধুকধুকি পরা বাচ্চাদের এলাকা। এর মাঝেই মাছিওড়া ফুচকা কিংবা জিলিপি কিংবা চাট বসে আছে। সেসব পেরিয়ে চোখ বোলালেই দেখা যায় ঘন সবুজ শ্যাওলার বুনোটে প্রাচীরটার একটা অংশ ঢেকে গেছে।


একদিন গেলাম ভাটিন্দা ফলস আর তোপচাঁচি। বর্ষাকাল পিকনিক পার্টির ভীড় নেই।  রাস্তাটায় আগে গেছি মাইথন যাবার সময়, এত সবুজ ছিল না, বরং রুক্ষই ছিল। এবারে যেতে গিয়ে দেখি ঝাড়খন্ডে ঢোকার অনেক আগে থেকেই চারদিকের ভূপ্রকৃতি অনেক সবুজ, সতেজ। ধানবাদ শহরের ভিতরে ঢোকার পর অবশ্য সেই ত্রাহিমাম অবস্থা, বিশেষ করে বীরসা মুন্ডা মোড়ের কাছে। গাড়ি এক ইঞ্চিও নড়ে না, অজস্র ট্রেকার, গাড়ি, বাইক, দরজা খুলে কেউ কেউ গুটখার পিক ফেলছে, আর উদাস চোখে ট্রাফিক পুলিশ দাঁড়িয়ে৷ বলাই বাহুল্য মাস্ক এখানে দুর্লভ, কাউকেই দেখিনি। হতাশ হয়ে বলব ভাবছি, "চলো আজ এই হোটেল ব্লুমুনে যাই ঘন্টা হিসেবে ঘর চাইবো ট্রাফিক খুললে ফের আসা যাবে খন। পানু শ্যুট হবে কিংবা রেইড, সে আর কী করা যাবে"!  হাপ ইঞ্চি করে করে এগিয়ে খানিক দূর যাবার পর দেখি, এক জায়গায় এক দল যুবক এক মাইল লম্বা ট্রাফিক দেখে কাঁধে হাত দিয়ে দাঁড়িয়ে খুব হাসছে! আমি মাইরি অবাক হয়েছি খুব। মানে কতটা কাজের বা আনন্দের অভাব হলে একদল কুড়ি বাইশ বছরের ছেলে দাঁড়িয়ে ট্রাফিক দেখে আনন্দ পায়! শনিবারের সকাল, ঘুরতে যা, না হলে আড্ডা মার জমিয়ে কিংবা খেলতে যা না হলে বই কিচ্ছু আনন্দের উপাদান নেই! কী জানি যার যাতে মজে মন। অবশেষে কোনো এক সময়ে এই বিষ্ণুর শয়ানের মতো লম্বা ট্রাফিক জ্যামের শেষ হয়৷ গুগলের উপর পুরো ভরসা করিনা তাই মাঝে এক জায়গায় একটা ছেলেকে জিজ্ঞেস করেছিলাম ভাটিন্দা ফলস এর ডিরেকশন।  তার তো কান্ডজ্ঞানের ভয়ানক অভাব! গাড়ির মধ্যে মাথা গলিয়ে মুখের কাছে এসে ডিরেকশন দিতে আসে। পরের অটোওয়ালাকে জিজ্ঞেস করলাম, " ও ঝরোয়া হ্যায় না জাঁহা? হাঁ হাঁ আগলা মোড়ওয়া সে লেফট লেকে চলে যানা"। বেশ বাবা বেশ, মোড়ওয়া থেকে ঝরোয়া যাবো খন। মোড় থেকে বাঁয়ে নিয়ে খানিক গেলে অবশ্য পাহাড় দেখা যায়। প্রায় শহরের বুক থেকে পাহাড় দেখতে পেলে আলাদা আনন্দ হয় কিন্তু। ওই ট্রাফিক জ্যাম দেখে ওদের যেমন আনন্দ হয়েছিল তেমনই প্রায়। তারপর অনেক মানুষে খাওয়া পাহাড়, ছোট ছোট জনপদ পেরিয়ে পেরিয়ে চলা গেল। এদিকে বেশ কটা অশ্লীল নামওয়ালা জায়গা দেখছি তো! পুঁটকি, মুন্ডি ও আবার কি!! যাকগে আমি সাধু সন্ন্যাসী মানুষ, পা থুড়ি অ্যাক্সিলেটর চালাই বাবা। পুঁটকি থেকে বাঁয়ে নিলে যে রাস্তা সেটা একটা গ্রামের মধ্যে দিয়ে গেছে। বেশ খানিকক্ষন গেলে হঠাৎ করে আসে হয়তো একটা পরিত্যক্ত অফিস কিংবা বাড়ি, আবার একটা ঢাউস বাড়ি যার সামনে গোয়ালঘর। আবার খানিক গেলে দুপাশে গাছ গাছলা, তারপর আবার কটা দেহাতি ঘরদোর। এদের ঘরের সামনেই গোয়াল। সে অবশ্য আমি বাংলার গাঁয়েও ওরকম দেখেছি অনেক জায়গায়। কিছু কিছু আদি অধিবাসীদের মুখের দেখা পাওয়া যায় পথ চলতি, টাটা স্টীলের দেওয়া সোলার লাইট। হুট করে পথে পরে একটা বট গাছ, বন্ধ কারখানা, কটা ছোট ছোট চা, ভাত, কোল্ড ড্রিংক্সের দোকান। আশ্চর্য শান্ত নিরিবিলি পুরো জায়গাটা। দোকানের খাবার জিনিস খুব একটা লোভ না দেওয়াই ভালো। কটা সাত পুরোবো বাসী গজা, বালুসাই এর বারকোশ।  


ভাটিন্ডা ফলসটা অন্য সময় লোকে লোকারণ্য থাকে,  এখন দুজন দেহাতি লোক মাছ ধরছে আর এক দুটো এলোমেলো পরিবার। আজকে আবার কেন জানিনা লোক নেই গেটে তাই বন্ধ! তবে তাতে অসুবিধে হয়নি আসতে,  পাঁচিল ভাঙা, আরামেই আসা যায়।জলের স্রোত খুব, পা রাখা যায়না এমন শ্যাওলা। দানবীয় শক্তির অধিকারী হলে বেশ শ্যাওলা, জলের স্রোত উপেক্ষা করে উপরে উঠে যেতাম! এক বুড়ি এসেছে ছাগল চড়াতে। বুড়ির ছাতায় দেখি রাশি রাশি পাতা, ছোট ছাগলটার জন্য সঞ্চয়!  আমাদের দেখে এক গাল হেসে বুড়ি খুব গল্প শুরু করলো। দুটো ছেলে নাকি ভেসে গেছে ছবি তুলতে গিয়ে। তারপর কোন রাজা নাকি নীচে পুজো বন্ধ করে দিয়েছিল উপরে চালু করেছিল এরকমই একবার ভুলে গেছিলো খরগ আনতে তারপর জল বেড়ে গেছিল। সব কথা ভালো বুঝছিলাম না, ভাষা বাংলা হলেও ডায়লেক্ট আলাদা, তায় বুড়ি একেবারে ফোকলা। আরো খানিক গল্প হল, তার চোখ আর্ধেক কাটানো হয়েছে, পরের বার গিয়ে পুরো কাটাবে। সত্যিই বুড়ির ছানিটা খুবই পড়েছে। যারা মাছ ধরছিল তারা বুড়ির বুড়ো আর লাতি। খুব গর্ব করে বলছিল। যেই বলেছি, তোমার বুড়ো তো জোয়ান আছে তোমার থেকে, বলে 'না না,  কই বুড়া হই গেছে'। দূরে পাথরের আড়ালে এক জোড়া যুবক যুবতী ব্যস্ত হয়ে পড়েছে, অবিশ্রান্ত জলের আওয়াজ, জঙ্গলের গন্ধ, সময়ে কেটে যাচ্ছিলো কেমন অদ্ভুত শান্তভাবে। তাড়া নেই, না পাওয়া নেই, চিন্তা নেই। 





ফেরার সময় টের পেলাম জঙ্গল কেমন গ্রাস করে নেয় তার হারানো জমি। একটা পরিত্যক্ত ঘর ভাটিন্ডা ফলসের গেটের মুখেই, মোটামোটা শিকড় চলে গেছে সেই রূপকথার গল্পের ডাইনির  পা এর মতো। যদিও গাছ য়ার শিকড় কোনোদিনই আমার কাছে ডাইনি বুড়ি হবে না। তারপর ফের চলা শুরু হয়, এদিক সেদিক করে চলতে চলতে তোপচাঁচি। মাঝে গুগল ফের ছড়িয়েছিল, তা লোকে তোপচাঁচি লেক বললে চিনতে না পারলেও, ' তোপচাঁচি মে ওয়াটার বডি হ্যায় না', বলতে চিনিয়ে দিলো। তোপচাঁচি যাবার রাস্তাটা দারুণ সুন্দর। বড় বড় মোটামোটা গাছে ঢাকা, সবুজ শামিয়ানা দিয়ে চলেছি মনে হয়। তোপচাঁচিও ফাঁকা মোটামুটি, লোকজন নেই তেমন, পিকনিক  পার্টির অত্যাচার নেই ভেবেই মন ভালো হয়ে যাচ্ছে আহা। শীতে এলে এখানে এতক্ষন উব উব উব ডিজে মিক্স চলত। তোপচাঁচি আসলে পাহাড় ঘেরা বড় হ্রদ।  হ্রদের পাশ দিয়ে রাস্তা, তারপর জঙ্গল। একটা গাছ দেখি সারা গায়ে ক্ষত নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। উই না কী কে জানে! আহারে। কথা বলতে চেষ্টা করলুম একবার, কিছু না স্রেফ কষ্টটা সেরে যাক এইটুকুই বলার। সে উলটে ঠান্ডা হাওয়া দিয়ে আমায় জুড়িয়ে দিলে, নিজের কষ্টের কথা পাত্তাই দিলো না।হ্রদের ওই পাশটায় জঙ্গল বেশী ঘন বেঞ্চগুলোও লতানে গাছে ঢেকে গেছে এই বর্ষায়।  তিনটে কাঠকুড়ানি ছেলে মেয়ে শুকনো জ্বালানি কুড়োচ্ছিল। সব চেয়ে  ছোত দুটো মিচিক করে হেসে দিলো। ছেঁড়া জামায় হাসি তো আর আটকায় না। 








ফেরার পথে খুব খাওয়া দাওয়া হল। পশ্চিমবঙ্গের থেকে সস্তা সেটা কথা না, ভারী আপ্যায়ন করে খেতে দিচ্ছিলো। মানে আজকাল মোটামুটি পপুলার ধাবা গুলো কে এলো কে গেলো পাত্তাও দেয় না, এদের তা দেখলাম না। বেরিয়ে দেখি তুমুল মেঘ করেছে। দূরের পাহাড়ে মেঘ নেমে এসেছে। এখানেও নামলো বলে। নীল পাহাড় কালো মেঘ সবুজ মাঠ নিয়ে ছুটতে ছুটতেই নামলো সে। প্রথমে আস্তে তারপর দিগবিদিক হারিয়ে পাগলের মতো, চারদিক সাদা হয়ে। শ্রাবন মাসে এটুকু পাগলামী তো হক তার। কিংবা হয়তো আমাদের বলছিল, আরেকটু থেকে যাওয়ার জন্য,যেমন সেই ছোটবেলায় কেউ এলে বলতাম কিংবা বলত 'আবার এসো '?