Monday, November 16, 2015

দুইয়ের পিঠে আট



অনেকদিন লিখিনি কিছু , লেখার কি থাকে না, অনেক কিছু থাকে কিন্তু সমস্যা হলো লেখা যখন মনে আসে হাত তখন ক্রিমিনাল কেস খেলতে ব্যস্ত থাকে।.দুজনের বনছে না আর কি ,আসলে  ২৮ বছর কাটিয়ে দিল তো একসাথে। দাম্পত্য পুরনো হলে যা হয় তাই হয়েছে। তবে এবারের লেখাটা আমি জন্মদিন স্পেশাল করব ভেবেছিলাম, কিন্তু আমার ছোটবেলার সঙ্গী জ্বর ব্যাটা বাধ সাধলো। যাকগে, দেরী তো কি কোনো একটা মহাপুরুষ বলেছেন না 'যাব উঠে তব সবেরা ' বা এমনি কিছু একটা। 
তুষারপাত শুরু হয়ে গেছে। আগের বারের উত্সাহ এইবার নেই, বরং মনে হচ্ছে ওরে বাবা শীতকাল চলে এলো আবার।  কিন্তু সেদিন সারা রাত বরফ পরার পর সকাল বেলা বেরিয়ে মনটা ভালো হয়ে গেল।  হু হু হাওয়া দিছে, ঠান্ডায় দাঁড়ানো মুশকিল, তবু চোখ জুড়িয়ে যায়। গাছ, রাস্তা সব সব ঢেকে গেছে সাদা চাদরে, রোদ উঠেছে তাতে আরো ঝক ঝক করছে, দূরের পাহাড়টা থেকে ধোয়া বেরোচ্ছে।  





সেদিন রাস্তায় হাঁটতে হাঁটতে ছেলেমানুষের মত বরফ নিয়ে বরফের গোল্লা করছিলাম আর পাশের গাছে ছুঁড়ে ছুঁড়ে মারছিলাম, হাতে গ্লাভস ছাড়াই( জ্বরকে দোষ দিয়ে লাভ আছে কাকা) এইসব পাগলামি করতে পেরে মন্দ লাগছিল না. ভাগ্গিস কেউ দেখেনি, যদিও আমি হেড আপিসের বড়বাবুর মতো গোমড়া না , তবে এইরকম করতে দেখলে লোকজন আওয়াজ দিতো  নিসন্দেহে।  

ভাইফোঁটাপাওয়া বছর তিনেক হলো বন্ধ হয়ে গেছে, কিন্তু এ বছরটা অন্যরকম। অনন্যাদির কাছ থেকে ভাইফোঁটা উপলক্ষে গিফট পেলাম  , কাঁকনদি ফোঁটা দিলো। জীবনটা কখনো কখনো লীলা মজুমদার এর গল্প হয়ে যায় যেখানে দুখী মানুষদের জন্য পরীরা আসে রাতের বেলা , দুধ কমলা না পেলেও বর দিয়ে যায়। 
ভাইফোঁটা সাথে প্রাপ্তি যোগ 



লীলা মজুমদার বলতে খেয়াল হলো, এবার অনেক কটা পূজো সংখ্যা পরলাম, বেশির ভাগ গল্পে একটা মানবিক আবেদন দেখলাম আমার যেটা বড় ভালো লাগে। ছোটবেলায় যে গল্প গুলোয় দূর্বল ছেলে গুলো জিতে যেত সেগুলোই ভালো লাগত, নিজে দুর্বল বলেই বোধহয়। সেই জন্যই পাগলা সাহেবের কবরের ওই ছেলেটা সন্তুর থেকে বেশি আপন ছিল।  সন্তু তো ভালো ছেলে , সাঁতার, ক্যারাটে সব পারে , আর ওই অদ্ভূতুরের ছেলে গুলো কিছুই পারত না।  

নিজের জন্মদিন নিয়ে মাতামাতি অত্যন্ত বোকা /মূর্খ  না হলে কেউ করে না। আমি মুর্খ এবং বোকা দুটোই , তাই আমার জন্মদিন আমার কাছে বেশ একটা উত্সব উত্সব ব্যপার।  বাড়িতে থাকতে সকালে ৯রকম মিষ্টি (৯ কারণ একটা বিজোড় সংখ্যা দরকার আর এর  বেশি  রফা করা যায়নি ) , মটরশুটির কচুরি আর আলুর দম, পায়েস তো আছেই।  দুপুরে ৫ রকম ভাজা সহ সুখাদ্য , রাতে বিরিয়ানি।  নিজেকে রাজা রাজা ফিল , হত ওই যে মুর্খ তো তাই।  জানি এরকম করাটাকে আদেখলেপনা বলে তবুও আনন্দ এতটাই পাই যে মূর্খ  ভাবতেও কষ্ট  হয় না।  গতবার জন্মদিনটা লম্বা ছিল, IST টাইম জোন দিয়ে শুরু আর MT টাইম জোনে শেষ।  আসে পাশে কেউ উইশ করার মতো ছিল না, তাই নিজেই নিজেকে ট্রিট দিয়েছিলাম। p f  Chang বলে যে চাইনিজ চেইনটা  আছে ওখানে  , Genghis গ্রিল  বলে একটা মঙ্গোলিয়ান রেস্টুরেন্ট , যেখানে বিভিন্ন উপাদান সাজানো থাকবে আর নিজের ইচ্ছে মত জিনিস নিয়ে ওদের দিলে ওরা বানিয়ে দেবে সেইখানে আর ihop এ , ওখানে খুব ভালো প্যানকেক পাওয়া  যায় , আর ওদের চিকেন ফাহিতা ওমলেট এই সব দিয়ে নিজে নিজেকে উইশ টুইশ করে মন খারাপ কমানোর ব্যবস্থা আর কি।  
অনেকদিন থেকে ইচ্ছে ছিল BMW বা কোনো convertible চালানোর , তো জন্মদিন উপলক্ষে  bmw  একদিনের জন্যে তুলেছিলাম । কেনা কোনো দিন হবে বলে মনে হয় না একদিনের জন্যই হোক।তবে একটা ভয়ানক তথ্য পেলাম,   ফেরারী বুক করতে গেলে নাকি ৩৮" কোমরের মাপ হতে হবে!! গাড়ি চালাতে গেলে কোমরের মাপ জরুরি কেন সেটা ঠিক বুঝিনি অবশ্য। 


এখানে কয়েকটা বন্ধু হয়েছে তারা  কেক কাটলো , একজন বিরিয়ানি বানিয়েছিল। আমি এত কিছু এক্সপেক্ট করিনি ...হুম বসুধৈবম কুটুম্বম।