Thursday, July 16, 2015

নানারকম 5


আমার টিমটা বেশ।  কাজের বাইরেও টুকটাক এদিক সেদিক খেতে যাওয়া  ঘোরাঘুরি দিব্বি হয়। সেদিন গিয়েছিলাম বেসবল দেখতে। ক্রিকেট এর দুরসম্পর্কের মাসতুতো  ভাই আরকি। একখান ডান্ডা দিয়ে বল পেটাতে হবে, এইসা  বড় বড় গ্লাভস পরে সেই বল ধরতে হবে। অবশ্য বল পেটালেও শান্তি নেই তাকে আবার দৌড়াতেও হবে। ব্যাটফ্যাট  ফেলে , দিয়ে ছোট ছোট। যাই হোক খেলাদেখার আগে পেট পুজো বাধ্যতামূলক।স্টেডিয়াম এর কাছেই একটা বার এ ঢুকে পছন্দসইড্রিঙ্কস আর খাবার এর অর্ডার দিয়ে আড্ডা হলো খানিক। চিকেন লেটুস wrap আর JackNCoke  সাঁটিয়ে হেলে দুলে চললাম।ধামায় করে চকলেট, ক্যারামেল পপকর্ন, বাদামভাজা, নাটস, সোডা, এইসব হাবিজাবি বিক্রি করেছে গেটের বাইরে।কলোরাডোর সাথে টেক্সাস এর খেলা।তাই স্বাভাবিকভাবেই কলোরাডোরসাপোর্টার বেশি চোখে পরছে। বসে বসে আড্ডা মারতে মারতে ঝাড়ি মারতে মারতে খেলা দেখা চলল।সেদিন খেলাটা বেশ ঢিমে তালের ছিল, সাথে আবার ভরাপেট ।  সব মিলিয়ে আমাদের মধ্যে আড্ডার মেজাজটাই  বেশি। অবশ্য  বাকিদের মধ্যেও তাই, খানিক খেলা দেখল, একবার উঠে বিয়ার  নিয়ে আসলো। 


একজন দেখি মাথায় ঝাকা টাইপ নিয়ে গোলা আইসক্রিম বিক্রি করছে! মানে তার নাম অন্য কিছু হতেই পারে, তবে তাকে দেখতে অবিকল গোলা আইসক্রিম। আমাদের সামনের সিটএ দুটোঅল্পবয়েসী  ছেলেমেয়ে বসেছে। যথারীতে মেয়েটির উত্সাহেছেলেটা  কিনেছে একখান , প্রেমিকা আল্হাদ করে খাইয়ে দিলেও বস্তুটি যে খুব একটা সুখকর খেতে নয় তা ছেলেটির মুখ দেখে মালুম হচ্ছিল। মনে মনে বললাম, কি আর করবি "পরেছ প্রেমিকার হাতে.." । নিজে অবশ্য এদেশীয়  গোলা  খেয়েছি এবং ভালই লেগেছে,  রামধনুর রঙের দেখতে  ছিল,কে  জানে!









এখানে এদের  হাট কেমন হয় দেখা হয়নি । ক্যালিফোর্নিয়াতে দেখার সুযোগ ঘটেছিল। বিরাট জায়গা জুড়ে হাট  বসেছে। না শুক্রবার ছিলনা, শনিবারে।  চাষীরা তাদের ফল, সবজি এনেছে।স্যাম্পেল রাখা আছে, খেয়ে দেখো,  তারপর কিনতেও পারো নাও পারো ।  এমনি মার্কেটের থেকে দাম কম। 




শুধু সবজি কিনলে চলবে কেন, ঘরসংসারের টুকিটাকি কিনবেকিনতে হবে। ওদিকটা চলে যাও. পেইন্টিং থেকেশুরু করে ছুড়ি কাঁচি ফুলের টব সব আছে। 


একটু গলা না ভেজালেই চলছেনা? বেশ চল একঢোক পান করে  নাও। একা একা হোক  কিংবা দলবল।  স্টেজের উপর  গিটার নিয়ে গান গাইছে একটা লোক , বিয়ার হাতে নিয়ে কিংবা খালি হাতেই শুনতে শুনতে দিল জান খুশ  হয়ে যায় । 



 তারপর হাটের অন্যদিকটা ঢু  রেমেরে দেখি জামা কাপড়ও  বিক্রি হচ্ছে সস্তায়। তবে মাছ দেখিনি ওখানে। মানে খলবল করবে মাছ , 'দাদা আমাকে একটা ১কেজির  একটা দেবেন, না না ওটা না ওইযে নড়ছে যেটা পাশে হাঁ হাঁ   ঐটা', এইসব করার উপায় নেই এই যা।


এখানে H -Mart বলে একটা কোরিয়ান দোকান আছে যেখানে জ্যান্ত মাছ পাওয়া যায়। ২টো  বা ৩টে "লাইভ তিলাপিয়া" বললেই ঝপাঝপজল থেকে মাছ তুলে নেবে, তারপর  জেনে নেবে  কিভাবে কাটাতে চাই।  ১-৯ভিন্ন ভিন্ন রকম আছে।  ফিলে , ছোট করে  কাটা, বড় করে  কাটা ইত্যাদি। আমি "ছোট এবং পরিস্কার" অপশনটা নিই সাধারণত। তবে দিন দিন আমি কসাই  হয়ে যাচ্ছি। সেদিন একটা গোটা  'বিদেশী' মুরগি এনেছিলাম, (মানে রোস্টেড মুরগিকে ঠিক পাতে দেবার যোগ্য মনে হয়না কিনা তাই বিদেশী)।  তারপর এক খানা বড় ছুড়ি দিয়ে তাকে টুকরো টাকরা করে  করে তাকে  বাঙালি মুরগি বানালাম।
রকি মাউন্টেন আগের বার গিয়েই মুগ্ধ হয়েছিলাম।কদিন আগে  আবার গিয়েছিলাম। পাহাড় ঘেরা লেক আগের বারেও চোখ জুড়িয়েছিল এবারও  জুড়ালো। কিন্তু গাছের  ছায়ায় ঝরনার ধারে  শুয়ে শুয়ে  সারাদিন কাটানো হলনা এবারেও। হয় অন্য কোনো সময় কিন্তু এমন লেকের ধরে হ্যামক ঝুলিয়ে শুয়ে শুয়ে বই পড়তে আবার আসতেই হবে।