Saturday, September 15, 2018

হাসপাতালের পর

"হেলদি" লাইফ ফলো করায় আজকাল আমার শরীরের ভিতরকার যন্ত্র গুলো চমকে চমকে যাচ্ছে, মানে এটা কিই হচ্ছে!! সাড়ে দশটার মধ্যে ঘুম! সকাল ছটায় ওঠা! এইরকম থাবা থাবা পেঁপে কুমড়োর ইনপুট! চোখ তো কাল মুচ্ছো যাচ্ছিলো, রাবড়ির ভাঁড়ে হাত না দিয়ে সন্দেশের প্যাকেটে হাত!! হাত রীতিমতো বিদ্রোহ করছিলো, বেঁকে বেঁকে যাচ্ছিলো যা হোক তাকে ম্যানেজ করা যায় শেষ তক। এরকম নানান বিস্ময় দেখে দেখে তারা নানান ভাভে জানাচ্ছে সে যাক, ঘটনা হলো এই সকাল সকাল ঘুম ভেঙে যাওয়ায় সকালটা দেখা হচ্ছে বেশ। মন্দ না কেমন যেন নতুন নতুন ব্যাপার।

জানলার পর্দা গুলো সরালেই সকালের নরম রোদ লুটোপুটি খেয়ে যায়। আমি আবার মোবাইলে সেই রোদ ধরে এদিক সেদিক ছুঁড়ে দিই। কাগজওলাদাদা হাঁক দিয়ে যায়, জয়দেবের সব্জীর  ট্রাক এসে নামিয়ে নামিয়ে যায়, বেগুন, কুমড়ো, পটল, শাকের আঁটি। কুমড়োর খানিক কাটা, দেখে নিয়েছে ভিতরটা, ট্রাকের ছেলেটা একটা দুটো বেগুন পটল নিজের জন্য রেখে রেখে দিচ্ছে। আরিব্বাস পটলের বস্তাটা কিই ভারী, ছেলেটা হেঁইয়ো করে নামালো। 

বিহারী জুতো সারাই লোকটা ফুটপাথে যেখানে বসে, তার সামনেটা ঝাঁটপাট দিয়ে নিলো। দুধের গাড়ি এসে দাঁড়িয়েছে, রাস্তা ফাঁকা এখনো।  স্কুলের বাস, একটা শাড়ি পরা টিফিন এর ব্যাগ নেওয়া মহিলা, বেকারির গাড়িটা...

মাছওয়ালা বটির ফালিটা হাতে নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে লাগিয়ে দেবে। আকাশটা এখনো নীল হয়নি, সকালের ঘোলাটে ভাবই রয়েছে কিন্তু চারদিকটা বেশ জেগে জেগে উঠছে বোঝা যায়। 

সকাল সকাল মনটা একটা চমৎকার গল্প পড়ে বেশ ফুরফুরে হয়ে আছে কিনা তাই এতো আজেবাজে বকলাম। বইটা আমার এক ফেসবুকের বন্ধুই দিয়েছে। আমার শরীর খারাপ শুনে, মহম্মদ জাফর ইকবাল এর ব্ল্যাকহোলের বাচ্ছা। কোনো সোশ্যাল এক্টিভিস্ট না, বদমায়েশী করে সাধু বলা নিজেকে যা কিছু নিয়ে বকবক করা একটা না দেখা লোককে এই যে এতো লোক ভালোবাসে এর তো কোনো কারন নেই না? আসলে কি জানো, লোকে ভালোবাসতেই চায়, ভালোটাই চারদিকে আমরা মাঝে মাঝে ওই খারাপটুকুর ধোঁয়া এলেই সব ঝুট হ্যায় বলে দিই বটে, তা মোটেও সত্যি না। 

ধোঁয়াটা কেটে গেলে দৃষ্টি স্বচ্ছ হয়ে গেলেই দেখো "আলোয় আলো আকাশ, আকাশ আলোয় ভরা..."

No comments:

Post a Comment