২ এপ্রিল ২০২০
সারাক্ষন খিদে পায়। খুটখাট করি, এটা টানি ওটা খুলি, ভাঁড়ার অফুরান নয় তাই ইচ্ছে মত খাওয়া চলে না, তাই জন্যেই বুঝি বেশী খিদে পায়। যা পাওয়া যায়না তার জন্যেই অস্থিরতা বেশী হয়। আমার মনে আছে, তোমাকে চাই গানটা যখন এফেমে শুনতাম, তখন হাঁ করে বসে থাকতাম, খাতায় লিখে নিয়েছিলাম অনেকবার শুনে শুনে, তারপর মোবাইলে স্টোর করলাম যেই আর শোনার জন্যে আকুলতাটা রইল না। রাজারহাটের রাস্তাটায় হলুদ, গোলাপি ফুল ফুটে গেছে এতদিনে, বাড়ির আমগাছগুলোয় ছোট ছোট আম ধরেছে নির্ঘাত, সুজিতদাদা এবারে পটল করতে পেরেছে? কালীপুজো পিছিয়ে গেছে করোনার জন্যে, যবেই হোক তখন তো আর এই খাঁ খাঁ রোদ্দুরের দুপুরটা থাকবে না। এই রোদ্দুরেই ছায়া ছায়া রাস্তা ধরে নিঝুম প্রহর পার হতে হয়,শুকনো ফুটিফাটা মাটির ধারে বিকেলে বসলে প্রাণ জুড়োনো হাওয়া দেয়।আমার দেখা হল না সেসব। আমি তো মরব না, পরের গরমে দেখতে পাবো ঠিক, কিন্তু যদি না পাই অন্য কোনো কারনে? এ সময়টা আমাদের পরীক্ষা শেষের ছুটি থাকতো, অনেকদিন পর এরকম দুপুরে বাড়ি থাকছি বলেই সেইসব দিনের দুপুর বয়ে যাচ্ছে মাঝে মাঝেই।আচ্ছা মাঠাংবুরুর কী হল? কোন দেশে চলে গেছে? আমার সাথে দেখা হয়েছিল সেও প্রায় মাস ছয়েক আগে, ছোট্ট নেংটি ইঁদুর টুং তার নাম, এনেছিল আমার গাড়ির উইন্ডস্ক্রীনে চড়িয়ে হাওয়া খাওয়াবে বলে। হুট করে একদিন গাড়ি চলতে চলত উইন্ডস্ক্রীনে ইঁদুর দেখলে যে কেউ চমকাবে, তবে নেহাত মাঠাংবুরুর কাজকর্ম জানা ছিল তাই ঘাবড়াইনি। আচ্ছা গাড়িটাই বা একা একা কেমন আছে? এই মাত্র মনে পড়লো কভার দিয়ে আসিনি, একা একা খুবই মন খারাপ করছে নির্ঘাত ধুলোমেখে।
আজ অফিসের একটা জুনিয়র কল করেছিল, অন্য টিমে কাজ করলে আমাদের টিম থেকে একেবারে সরে যাবে কিনা জানতে। আমি ওই মিটিংটায় ছিলাম যেখানে ওকে আমাদের টিম থেকে ছেড়ে দেওয়া হচ্ছে, জানি কিছুই হবে না বদল তাও বললাম আরে দেখই না কি হয়, লকডাউন শেষে দেখলি হয়ত ফের এই টিমেই কাজ করতে হবে। এ কথাটা স্তোক হিসেবেই বলেছি, কিন্তু তা সাথে আরে আছি তো বলে আশ্বাসটা স্তোক না, দুম করে হাত ছেড়ে দিলে ভয় লাগে মন খারাপ হয়, সবে মাত্র চাকরির শুরুতে অমন হলে মন খারাপে ঠেলে দিতে কষ্ট লাগে। আছি ভাই আছি। এটুকুই তো পারি...লকডাউনে কিংবা তারপরে...
************************************
৩ এপ্রিল ২০২০
প্রত্যেক মানুষের জীবনে একটা সময় আসে যখন সে নিজের কৃতকর্মের জন্য অনুতপ্ত হয়, যখন সে নিজের কাজ যা সে বিরাট কিছু ভাবতো তা যে আসলে একটি ভয়ানক জিনিস তা বোঝে।
আমার ক্ষেত্রে এটা হল, যখন ট্র্যাক অন করে নিজের গান রেকর্ড করলাম।
আমি আমার প্রতিবেশীর দুঃখ এতদিনে বুঝলাম!
*************************************
০৫ এপ্রিল ২০২০
থালা বাজানোর পরের টাস্ক ছিল, দশ মিনিট আলো বন্ধ করে রাখা।এ নিয়ে কদিন ফেসবুক সরগরম ছিল। আজ নির্দিষ্ট সময় দেখি পিলপিল করে লোক রাস্তায় বেরিয়ে গেছে, কে যেন তুবড়িতে আগুন দিলো, পটকা ফাটালো এক বাড়ির ছাদ থেকে, সবুজ রঙের আলোয় আকাশ উদ্ভাসিত,দুম দাম শব্দে আকাশ মুখরিত..আহাহা ....করোনা মহোৎসব 😌
*************************************
০৬ এপ্রিল ২০২০
একটা কাল্পনিক কথোপক........
- বলছি শোনো না।
- কী হয়েছে কি? চা ফা পাওয়া যাবে না এখন। অত চা পাতা নেই।
- আহা শোনোই না।
- থাক আমার জানা আছে, নিশ্চয়ই শক্ত মতো বর্মটা থেকে পা বের করে বলবে আঙুল গুলো টেনে দিতে।
- না না। এই দেখো না কেমন আমাদের ছবি দিয়েছে। ওই যে বালিতে শুয়ে ছিলাম সবাই মিলে, ভীড় নেই বলে ওই সময় তুলেছে।
- তাই দেঝি তো? আমায় তো খুবই মিষ্টি লাগছে। আর তোমার ভুঁড়িটা দেখো, আর ওই দেখো বর্মটার মধ্যে কেমন ছেতরে শুয়ে আছো, একটু পরে বলবে হাত পায়ে ব্যথা করছে!
- উহ বউ। একটু চুপ করো দেখি, ওই দেখো নীলমাছ পিং করেছে, কত কী খাচ্ছে দেখো একবার। মানুষ গুলো না থাকায় খাবার দাবার পাওয়া সোজা হয়েছে বটে
- জানিনা যাও তো। সারাক্ষন খাই খাই না হলে মাথা টিপে দাও, এই দাও, জ্বালাবে না আমি এখনো খেন্তি, বুঁচি ওদের সাথে ঝিনুক কুড়োতে যাব। খাই খাই করবে না, একটু দেরী হবে, শ্যাওলার একটা রেসিপি আছে বানাবো।
-আচ্ছা যাবে, তোমায় আজ হেব্বি ঝাড়পিটের সিনেমা দেখাবো। কচ্ছপের ইতিহাসে এই সিনেমা একটা মাইলস্টোন বলতে পারো।
- না আমি থ্রিলার দেখবো। জঙ্গলে একটা কচ্ছপ আটকে গেছে ওইখান থেকে বের হয়ে আসা নিয়ে দারুন একটা সিরিজ আছে তো, চলো না ওইটা দেখি, চলো না।
-আচ্ছা আচ্ছা সে হবে খন। বলছি যাবার আগে আমার পিঠটা একটু চুলকে দেবে?
-🤬🤬
সারাক্ষন খিদে পায়। খুটখাট করি, এটা টানি ওটা খুলি, ভাঁড়ার অফুরান নয় তাই ইচ্ছে মত খাওয়া চলে না, তাই জন্যেই বুঝি বেশী খিদে পায়। যা পাওয়া যায়না তার জন্যেই অস্থিরতা বেশী হয়। আমার মনে আছে, তোমাকে চাই গানটা যখন এফেমে শুনতাম, তখন হাঁ করে বসে থাকতাম, খাতায় লিখে নিয়েছিলাম অনেকবার শুনে শুনে, তারপর মোবাইলে স্টোর করলাম যেই আর শোনার জন্যে আকুলতাটা রইল না। রাজারহাটের রাস্তাটায় হলুদ, গোলাপি ফুল ফুটে গেছে এতদিনে, বাড়ির আমগাছগুলোয় ছোট ছোট আম ধরেছে নির্ঘাত, সুজিতদাদা এবারে পটল করতে পেরেছে? কালীপুজো পিছিয়ে গেছে করোনার জন্যে, যবেই হোক তখন তো আর এই খাঁ খাঁ রোদ্দুরের দুপুরটা থাকবে না। এই রোদ্দুরেই ছায়া ছায়া রাস্তা ধরে নিঝুম প্রহর পার হতে হয়,শুকনো ফুটিফাটা মাটির ধারে বিকেলে বসলে প্রাণ জুড়োনো হাওয়া দেয়।আমার দেখা হল না সেসব। আমি তো মরব না, পরের গরমে দেখতে পাবো ঠিক, কিন্তু যদি না পাই অন্য কোনো কারনে? এ সময়টা আমাদের পরীক্ষা শেষের ছুটি থাকতো, অনেকদিন পর এরকম দুপুরে বাড়ি থাকছি বলেই সেইসব দিনের দুপুর বয়ে যাচ্ছে মাঝে মাঝেই।আচ্ছা মাঠাংবুরুর কী হল? কোন দেশে চলে গেছে? আমার সাথে দেখা হয়েছিল সেও প্রায় মাস ছয়েক আগে, ছোট্ট নেংটি ইঁদুর টুং তার নাম, এনেছিল আমার গাড়ির উইন্ডস্ক্রীনে চড়িয়ে হাওয়া খাওয়াবে বলে। হুট করে একদিন গাড়ি চলতে চলত উইন্ডস্ক্রীনে ইঁদুর দেখলে যে কেউ চমকাবে, তবে নেহাত মাঠাংবুরুর কাজকর্ম জানা ছিল তাই ঘাবড়াইনি। আচ্ছা গাড়িটাই বা একা একা কেমন আছে? এই মাত্র মনে পড়লো কভার দিয়ে আসিনি, একা একা খুবই মন খারাপ করছে নির্ঘাত ধুলোমেখে।
আজ অফিসের একটা জুনিয়র কল করেছিল, অন্য টিমে কাজ করলে আমাদের টিম থেকে একেবারে সরে যাবে কিনা জানতে। আমি ওই মিটিংটায় ছিলাম যেখানে ওকে আমাদের টিম থেকে ছেড়ে দেওয়া হচ্ছে, জানি কিছুই হবে না বদল তাও বললাম আরে দেখই না কি হয়, লকডাউন শেষে দেখলি হয়ত ফের এই টিমেই কাজ করতে হবে। এ কথাটা স্তোক হিসেবেই বলেছি, কিন্তু তা সাথে আরে আছি তো বলে আশ্বাসটা স্তোক না, দুম করে হাত ছেড়ে দিলে ভয় লাগে মন খারাপ হয়, সবে মাত্র চাকরির শুরুতে অমন হলে মন খারাপে ঠেলে দিতে কষ্ট লাগে। আছি ভাই আছি। এটুকুই তো পারি...লকডাউনে কিংবা তারপরে...
************************************
৩ এপ্রিল ২০২০
প্রত্যেক মানুষের জীবনে একটা সময় আসে যখন সে নিজের কৃতকর্মের জন্য অনুতপ্ত হয়, যখন সে নিজের কাজ যা সে বিরাট কিছু ভাবতো তা যে আসলে একটি ভয়ানক জিনিস তা বোঝে।
আমার ক্ষেত্রে এটা হল, যখন ট্র্যাক অন করে নিজের গান রেকর্ড করলাম।
আমি আমার প্রতিবেশীর দুঃখ এতদিনে বুঝলাম!
*************************************
০৫ এপ্রিল ২০২০
থালা বাজানোর পরের টাস্ক ছিল, দশ মিনিট আলো বন্ধ করে রাখা।এ নিয়ে কদিন ফেসবুক সরগরম ছিল। আজ নির্দিষ্ট সময় দেখি পিলপিল করে লোক রাস্তায় বেরিয়ে গেছে, কে যেন তুবড়িতে আগুন দিলো, পটকা ফাটালো এক বাড়ির ছাদ থেকে, সবুজ রঙের আলোয় আকাশ উদ্ভাসিত,দুম দাম শব্দে আকাশ মুখরিত..আহাহা ....করোনা মহোৎসব 😌
*************************************
০৬ এপ্রিল ২০২০
একটা কাল্পনিক কথোপক........
- বলছি শোনো না।
- কী হয়েছে কি? চা ফা পাওয়া যাবে না এখন। অত চা পাতা নেই।
- আহা শোনোই না।
- থাক আমার জানা আছে, নিশ্চয়ই শক্ত মতো বর্মটা থেকে পা বের করে বলবে আঙুল গুলো টেনে দিতে।
- না না। এই দেখো না কেমন আমাদের ছবি দিয়েছে। ওই যে বালিতে শুয়ে ছিলাম সবাই মিলে, ভীড় নেই বলে ওই সময় তুলেছে।
- তাই দেঝি তো? আমায় তো খুবই মিষ্টি লাগছে। আর তোমার ভুঁড়িটা দেখো, আর ওই দেখো বর্মটার মধ্যে কেমন ছেতরে শুয়ে আছো, একটু পরে বলবে হাত পায়ে ব্যথা করছে!
- উহ বউ। একটু চুপ করো দেখি, ওই দেখো নীলমাছ পিং করেছে, কত কী খাচ্ছে দেখো একবার। মানুষ গুলো না থাকায় খাবার দাবার পাওয়া সোজা হয়েছে বটে
- জানিনা যাও তো। সারাক্ষন খাই খাই না হলে মাথা টিপে দাও, এই দাও, জ্বালাবে না আমি এখনো খেন্তি, বুঁচি ওদের সাথে ঝিনুক কুড়োতে যাব। খাই খাই করবে না, একটু দেরী হবে, শ্যাওলার একটা রেসিপি আছে বানাবো।
-আচ্ছা যাবে, তোমায় আজ হেব্বি ঝাড়পিটের সিনেমা দেখাবো। কচ্ছপের ইতিহাসে এই সিনেমা একটা মাইলস্টোন বলতে পারো।
- না আমি থ্রিলার দেখবো। জঙ্গলে একটা কচ্ছপ আটকে গেছে ওইখান থেকে বের হয়ে আসা নিয়ে দারুন একটা সিরিজ আছে তো, চলো না ওইটা দেখি, চলো না।
-আচ্ছা আচ্ছা সে হবে খন। বলছি যাবার আগে আমার পিঠটা একটু চুলকে দেবে?
-🤬🤬
![]() |
ছবিঃ ইন্টারনেট |
eta best
ReplyDeleteহাহা ।
Deleteআহা
ReplyDelete:) থ্যাংক ইউ সুদীপ।
Delete