Tuesday, April 23, 2019

চোখের সামনে

আমাদের অফিসের বারান্দাটা ভারী ভালো। সামনে অনেক কটা খোপ কাটা খোপ কাটা ভেড়ি। একটা দুটো নৌকা চলছে। দূরে একটা বাড়ি থেকে ধোঁয়া উঠছে সরু হয়ে, গরম ভাত আর মাছের কি? একটা চিল মাঝে মাঝে আকশে ডাইভ দেয়। একটা হলুদ পাখি অকারণ ওড়াউড়ি করে। খুঁটির উপর বসে বসে পানকৌড়ি মাছের কাঁটা দিয়ে দাঁত খুঁচোতে খুঁচুতে একটু ঝিমিয়ে নেয়। দুপুরে বাপু একটু রিলাক্সেশন এর প্রয়োজন আছে। কাল একটা নারকেল পাতায় ওপেন এয়ার স্পা এর দোকান দেখলাম বুঝলে। ভারী সরল ব্যবস্থা, দু জন মোটে, একজন ম্যাসাজ করছে ঠোঁট দিয়ে দিয়ে আরেকজন চোখ বুজে নিচ্ছে। একটু দূরে লাইনে আরো তিনটে কাক আছে। তাড়া নেই কারোর। আর এমন না যখিন তখন খোলা পাবে। ঠিক দুটো থেকে তিনটে অব্দি খোলা। তারপর তো আরো কাজ থাকে নাকি। একই জায়গায় বসে থাকলেই হবে। ভেড়ীর পূব দিকে ভালো একটা ত্রিফলা লাইট ক্যাফে হয়েছে। ভেড়ির পচা মাছ ফাছ ইত্যাদি ফেলে যায়। ঢালোয়া আয়োজন।

বাড়ির বারান্দায় দাঁড়ালেও আশ্চর্য সব জিনিস দেখা যায়। এই একটা বর এলো ব্যান্ড বাজিয়ে, ঘোড়ায় টানা গাড়িতে নতুন বউকে নিয়ে। ঠিক মোড়ের মাথায় সব গাড়ি আটকে দিয়ে পরপর দশটা বাজি ছুঁড়লো,ওই যে আকাশে গিয়ে ফাটে যেগুলো ওগুলো। সব গাড়ি অটো টোটো দাঁড়িয়ে, কেন, না রাজপুত্তুর আজ যৌবন জ্বালা মেটাবেন! যাইহোক, বাজি তো শেষ কিন্তু ঘোড়া তো ঘাবড়ে গেছে। তারা আর এগোয় না। শেষে বর বউ ঘোড়ার গাড়ি থেকে নেমে এক টোপর, জোড়, ধুতি,শাড়ি মিলে লাট হয়ে এগোলো। কী আর করা..

আজকের চাঁদটাও সুন্দর তবে কালকেও একটা অবাক করা লাল চাঁদ উঠেছিল। গুড ফ্রাইডে বলে ফাঁকা মাঠে জলদিই বেরিয়েছিলাম। রাস্তা দিয়ে এই গাড়ি ওই অটো এসব কাটিয়ে হঠাৎ সামনে তাকিয়ে দেখি রাস্তার মুড়োয় গাড়ির সামনে একটা এইইই ব্বড় লাল চাঁদ। সে যে কিই সুন্দর কি বলব। হুট করে দেখেছি বলেই মনে হয় ডাবল ভালো লেগেছে। মানে যা পাবার আশাই করিনি এমন কিছু পেলে বেশী আনন্দ হয় না? ওরকম। কি ভাগ্যিস এখনো অবাক হতে পারি। লাল চাঁদটাকে গাড়ির বনেটের উপর ঝুলিয়ে ভারী আরামে আসা গেল।

No comments:

Post a Comment