Wednesday, May 29, 2019

ফটোগ্রাফ

-মা এই ফ্রক পরে মেয়েটা তুমি?

মা মিটিমিটি হাসে।

- আরিব্বাস বেলবটম সানগ্লাস পরে হেব্বি কেত দিয়েছ তো? ও মা, এই হাঁস আর বকের ছবিটা কেন?

-আরে ওটা আমার প্রথম তোলা ছবি। তোর বাবাই শেখাচ্ছিল।

-হি হি এই গাব্দা বাচ্ছাটা কে মা?

- আরে ওটা তো পাপু।

-আর এই এতগুলো বাচ্ছা এরা কারা?

- এই দেখ এটা হল মাধু, ওটা ববি, এই কোনে নিমি, ওই পিছনে ওটা মিতি....

- মা এটা মেজমামা না? আর এটা কে? বাবুদা?

-না না বাবু কেন এটা তো তুই চিনবি না আমার জ্যাঠামশাই এর দিকে, রাঙাদার ছেলে।

- এহে এটা নষ্ট হয়ে গেছে একে বারে, এটা তোমাদের বিয়ের ছবি?

- হ্যাঁ। তা কতদিনের পুরোনো সব ছবি।

- মা, বাবাইকে তো হেব্বি দেখতে ছিল অল্পবয়সে। উরিন্না আবার কায়দার গোঁফ। তোমাকেই বরং এ ছবিটায় কেমন রুগ্ন মত লাগছে।
মা এটা কোথায়? আমাদের পুরোনো বাড়ির ছাদ? চারপাশটা কেমন অন্যরকম লাগছে। 
আরিব্বাস এটায় তোমাদের দুজনকে দারুন লাগছে তো।

মা লাজুক হাসে সমর্থনের ভঙ্গীতে।

একের পর এক বিবর্ণ, সাদা কালো ছবি দেখি।কত সব চেনা অচেনা লোক, কত অজানা ফ্রেম, নিস্পাপ হাসি, লাজুক হাসাহাসি, অনাড়ম্বর শুরুয়াদ.....কত লোক আর বেঁচেই নেই, কত লোক জানেও না তাদের কোনো বিশেষ মুহুর্ত কোন খানে রয়ে গেছে। ধূলো সরিয়ে বিবর্ণ ছেঁড়া অ্যালবামের ফাঁক দিয়ে কতকালের সব কথা শোনা যায়।কাদের ছাদ, কোন কলতলা, কোন ধানের ক্ষেত, প্রথম একসাথে চলা...কত কি।

কার কোন অ্যালবামে আমার কোন ফটোগ্রাফ হতে গেল কে জানে, তাকে আমি চিনি হয়তো কিংবা চিনিনা....এ ছবিতে রিটেক হবে না, পজিশন নেবার সুযোগ হবে না হুট করে রয়ে যাব। খেলার মত করে ছবি তুলতে তুলতে রয়ে যাওয়া কোনো ছবি দেখতে চিনবে কিংবা চিনবে না...

No comments:

Post a Comment