সকালে একজন ফেসবুকে বলল ভোট দিতে গেলে নাকি কচুরি জিলিপি, দুপুরে বিরিয়ানি এসব খাওয়াচ্ছে। তড়িঘড়ি দাঁত মেজে রেডি হয়ে ভোট দিতে গিয়ে দেখি কোথায় কি সব ফক্কা। দুটো মেশিন খারাপ তাই ইয়া লম্বা লাইন পড়েছে। যদিও আমায় দেখেই, 'আইয়ে মহারাজ আপ ইধারসে যাইয়ে। এই হট যা মহারাজকো পেহলে যানে দে' এসব বলছিল কিন্তু আমি তো এত লোকের কষ্ট নিজের মধ্যে ধারন করতেই মর্ত্যে এসেছি। আমি কি আগে যেতে পারি? তাই চট করে ছদ্মবেশ ধরে নিলাম। আরে সাধক মানুষ এটুকু পারবো না৷ তারপর লাইন মেন্টেন করে ভোট দিয়ে, দই চিঁড়ে মুড়কি কলা আম দিয়ে মেখে খেয়ে এক গ্লাস তরমুজের সরবত খেয়ে আরাম করে বারান্দায় গিয়ে দেখি একটা লম্বা চওড়া কাক একটা কুকুরের পিঠে বসে যাত্রা করেছে। রাস্তাঘাট ফাঁকা।মংসের দোকানে, কচুরির দোকানে লম্বা লাইন। এমন শান্ত দিন তো খুব বেশী দেখা যায় না, তাই কালকের ঘটনাটা বলে একটু নিদ যাই৷
হয়েছেকি কাল আমার দুজন গাল্ফেনের সাথে পর পর অ্যাপয়েন্টমেন্ট ছিল। এটা একটু রিস্কি মনে হচ্ছে যাদের তাদের বলি মহারাজের কাছে দীক্ষা নিয়ে নিতে পারো, সব ভয় কেটে যাবে।
তো প্রথম গাল্ফেনের সাথে জাকারিয়াতে যাওয়া হল। আইবাপ্রে কীইই ভীড় কীইইই ভীড়। দুধারে লাচ্চা সেমুই, বাখরখানি থেকে হরেকরকম পাঁউরুটির দোকান, জামাকাপড়, সাজের জিনিস পেরিয়ে ধোঁয়া দেখা গেল। ধোঁয়া মানেই কাবাব। ইয়া লম্বা লাইন দিয়ে ওজন করে মশলা মাখা মাংস নিয়ে ফের বিল দিয়ে রান্না করা মাংস নিতে হয়। রাস্তার উপরেই চেয়ার পাতা, আরাম করে খাও। হাঁড়ি করে হালিম বিকোচ্ছে খুব। কিন্তু এই গরমে বিফ হালিম সাধুর পেটে সইবে না। পরে হভে বলে স্কিপ করে এগিয়ে আরো নানান কিসিমের কাবাব এদিক ওদিক থেকে খেয়ে দেখি লোকে লাইন দিয়ে ম্যাঙ্গো শেক খাচ্ছে৷
ইগ্নোরন্স ইজ ব্লিস কথাটা কত খাঁটি তক্ষুনি বুঝলাম জানেন।যদি না জানতাম এগুলো মর্গের বরফ আমিও আরাম করে এক গেলাস খেতাম কিনা? বিশ্বাস চলে গেলে মানুষের আর কি থাকে হ্যাঁ? সুতরাং ওসব না খেয়ে ঝুরি আইস্ক্রীম খাওয়া গেল। ঝুরি আইস্ক্রীম হল একটা পেল্লায় বরফের চাঙর ঘোরানোর কল থেকে ছুরি কেটে কেটে দেওয়া আইস্ক্রীম। এই বরফ মর্গ থেকে আসে কিনা এখনো জানিনা ভাগ্যিস।
তো এসব করে ক্লান্ত হয়ে গেছিলাম। পরের গাল্ফেনের সাথে মিটের তখনো খানিক বাকি তাই তাকে নিয়ে কলেজ স্কোয়ারে বসেছি। ফস করে আমার হাত ধরে একজন লোক বলে বয়স কত?
-কেন?
- প্রশ্ন করেছি জবাব দেবে। কেন এসব প্রশ্ন করবে না।
এই বলে আমার হাত ধরে দেখি মন দিয়ে উল্টেপাল্টে দেখছে। কোনো গাল্ফেনও এত মন দিয়ে আমার হাত ধরেনি তক্ষুনি শিওর হয়ে গেলাম ব্যাটা জ্যোতিষী নির্ঘাত। বেশ বেশ। গাল্ফেনকে বললাম," তুই যা, তোর আবার দেরী হয়ে যাচ্ছে। আমি কল করে নেব।" সে উঠতে যাবে, জ্যোতিষী আবার বলে, "দাঁড়াও তোমার হাতটা দেখি"।
-ওর বাড়িতে চাপ আছে একটু তাড়াতাড়ি হ্যাঁ?
- আহ তুমি থামো। যা জিজ্ঞেস করলাম উত্তর দাও। বয়স কত? তুমি জেনে রাখবে তোমার ভাগ্য তোমার হাত দেখেছি। সবার হাত আমি দেখিনা।
বদ বুদ্ধি আমার নেই মোটেও। নিরীহ গলায় বললাম, পঁচিশ(আসলের থেকে ছ বছর কম)।
- হুঁ। কি করো?
খুউউব করুন গলায় বললাম, " কিচ্ছু না, পড়াশোনা করে চাকরি খুঁজছি। "
-হুম। কই দেখি তোমার হাতটা, তোমার বয়স? একই বয়সী? বাড়িতে সমস্যা হচ্ছে না? তুমি তো খুব রাগী দেখছি। থালা বাসন ভাঙার অভ্যেস আছে দেখছি। পড়াশোনাও তো আর করো না। তা একে বিয়ে করতে রাজী হচ্ছ না কেন?
প্রসঙ্গতঃ এই গাল্ফেনটি খুবই শান্ত শিষ্ট, পড়াশোনাও প্রচুর, বিয়েও ঠিক হয়ে গেছে (আমার কপাল!)। আমি খুব কাঁচুমাচু হয়ে বললাম, হ্যাঁ আসলে আমি চাকরি করিনা তো তাই....
বলল হ্যাঁ তোমার হাতে তো চাকরির যোগ নেই। হয়ে যাবে। একে বিয়ে করো৷ আর হ্যাঁ তোমার যেমন মাথা ঠান্ডা অমনই থেকো, এইই তোমার স্ত্রী জানবে তা যতই রাগ করুক।
ততক্ষনে আমার ওই গাল্ফেন উঠে চলে গেছে তার তাড়া ছিল। পরের গাল্ফেনের আসার সময় হয়ে গেছে। তাকে এখানে আসতে লিখে, জ্যোতিষী কাকাকে বললাম, " তাহলে এইই? খুব রাগী কিনা..."
- তুমি খেয়াল করে দেখেছ কি আর কোনো মেয়ের সাথে তোমার ভাব সাব হয় না, কথা হয় না। কেন জানো? শুধু এই মেয়ের সাথেএ তোমার বন্ধুত্ব হল। আমি বলছি....শোনো কুড়ি টাকা দাও আর ওর হাতে একটা মুক্তো দিও।
বলতে বলতে পরের গাল্ফেন হাজির। সে আবার আমার কলিগও। এসেই সে হুড়মুড় করে, " আরে একটা মিটিং রেখেছে আজ রাতে, তোকেও কলে জয়েন করতে হবে। চল চল প্যারামাউন্ট বন্ধ হয়ে যাবে।" তখনো আমার হাত কাকার হাতে...সেদিকে তাকিয়ে, "তোর ওরিয়েন্টেশন বদলে গেল কবে!"
- না ইনি বলছিলেন আমার চাকরি হবে না আর আমার আর "ইয়েই" আমার স্ত্রী। কি করি বলতো।
কাকা এর হাতটাও একবার?.....
কাকা ভীষন রেগে বিড়ি ধরিয়ে মুখ ঘুরিয়ে নিলেন।
কী ভুলটা বলেছিলাম হ্যাঁ? -_-
হয়েছেকি কাল আমার দুজন গাল্ফেনের সাথে পর পর অ্যাপয়েন্টমেন্ট ছিল। এটা একটু রিস্কি মনে হচ্ছে যাদের তাদের বলি মহারাজের কাছে দীক্ষা নিয়ে নিতে পারো, সব ভয় কেটে যাবে।
তো প্রথম গাল্ফেনের সাথে জাকারিয়াতে যাওয়া হল। আইবাপ্রে কীইই ভীড় কীইইই ভীড়। দুধারে লাচ্চা সেমুই, বাখরখানি থেকে হরেকরকম পাঁউরুটির দোকান, জামাকাপড়, সাজের জিনিস পেরিয়ে ধোঁয়া দেখা গেল। ধোঁয়া মানেই কাবাব। ইয়া লম্বা লাইন দিয়ে ওজন করে মশলা মাখা মাংস নিয়ে ফের বিল দিয়ে রান্না করা মাংস নিতে হয়। রাস্তার উপরেই চেয়ার পাতা, আরাম করে খাও। হাঁড়ি করে হালিম বিকোচ্ছে খুব। কিন্তু এই গরমে বিফ হালিম সাধুর পেটে সইবে না। পরে হভে বলে স্কিপ করে এগিয়ে আরো নানান কিসিমের কাবাব এদিক ওদিক থেকে খেয়ে দেখি লোকে লাইন দিয়ে ম্যাঙ্গো শেক খাচ্ছে৷
ইগ্নোরন্স ইজ ব্লিস কথাটা কত খাঁটি তক্ষুনি বুঝলাম জানেন।যদি না জানতাম এগুলো মর্গের বরফ আমিও আরাম করে এক গেলাস খেতাম কিনা? বিশ্বাস চলে গেলে মানুষের আর কি থাকে হ্যাঁ? সুতরাং ওসব না খেয়ে ঝুরি আইস্ক্রীম খাওয়া গেল। ঝুরি আইস্ক্রীম হল একটা পেল্লায় বরফের চাঙর ঘোরানোর কল থেকে ছুরি কেটে কেটে দেওয়া আইস্ক্রীম। এই বরফ মর্গ থেকে আসে কিনা এখনো জানিনা ভাগ্যিস।
তো এসব করে ক্লান্ত হয়ে গেছিলাম। পরের গাল্ফেনের সাথে মিটের তখনো খানিক বাকি তাই তাকে নিয়ে কলেজ স্কোয়ারে বসেছি। ফস করে আমার হাত ধরে একজন লোক বলে বয়স কত?
-কেন?
- প্রশ্ন করেছি জবাব দেবে। কেন এসব প্রশ্ন করবে না।
এই বলে আমার হাত ধরে দেখি মন দিয়ে উল্টেপাল্টে দেখছে। কোনো গাল্ফেনও এত মন দিয়ে আমার হাত ধরেনি তক্ষুনি শিওর হয়ে গেলাম ব্যাটা জ্যোতিষী নির্ঘাত। বেশ বেশ। গাল্ফেনকে বললাম," তুই যা, তোর আবার দেরী হয়ে যাচ্ছে। আমি কল করে নেব।" সে উঠতে যাবে, জ্যোতিষী আবার বলে, "দাঁড়াও তোমার হাতটা দেখি"।
-ওর বাড়িতে চাপ আছে একটু তাড়াতাড়ি হ্যাঁ?
- আহ তুমি থামো। যা জিজ্ঞেস করলাম উত্তর দাও। বয়স কত? তুমি জেনে রাখবে তোমার ভাগ্য তোমার হাত দেখেছি। সবার হাত আমি দেখিনা।
বদ বুদ্ধি আমার নেই মোটেও। নিরীহ গলায় বললাম, পঁচিশ(আসলের থেকে ছ বছর কম)।
- হুঁ। কি করো?
খুউউব করুন গলায় বললাম, " কিচ্ছু না, পড়াশোনা করে চাকরি খুঁজছি। "
-হুম। কই দেখি তোমার হাতটা, তোমার বয়স? একই বয়সী? বাড়িতে সমস্যা হচ্ছে না? তুমি তো খুব রাগী দেখছি। থালা বাসন ভাঙার অভ্যেস আছে দেখছি। পড়াশোনাও তো আর করো না। তা একে বিয়ে করতে রাজী হচ্ছ না কেন?
প্রসঙ্গতঃ এই গাল্ফেনটি খুবই শান্ত শিষ্ট, পড়াশোনাও প্রচুর, বিয়েও ঠিক হয়ে গেছে (আমার কপাল!)। আমি খুব কাঁচুমাচু হয়ে বললাম, হ্যাঁ আসলে আমি চাকরি করিনা তো তাই....
বলল হ্যাঁ তোমার হাতে তো চাকরির যোগ নেই। হয়ে যাবে। একে বিয়ে করো৷ আর হ্যাঁ তোমার যেমন মাথা ঠান্ডা অমনই থেকো, এইই তোমার স্ত্রী জানবে তা যতই রাগ করুক।
ততক্ষনে আমার ওই গাল্ফেন উঠে চলে গেছে তার তাড়া ছিল। পরের গাল্ফেনের আসার সময় হয়ে গেছে। তাকে এখানে আসতে লিখে, জ্যোতিষী কাকাকে বললাম, " তাহলে এইই? খুব রাগী কিনা..."
- তুমি খেয়াল করে দেখেছ কি আর কোনো মেয়ের সাথে তোমার ভাব সাব হয় না, কথা হয় না। কেন জানো? শুধু এই মেয়ের সাথেএ তোমার বন্ধুত্ব হল। আমি বলছি....শোনো কুড়ি টাকা দাও আর ওর হাতে একটা মুক্তো দিও।
বলতে বলতে পরের গাল্ফেন হাজির। সে আবার আমার কলিগও। এসেই সে হুড়মুড় করে, " আরে একটা মিটিং রেখেছে আজ রাতে, তোকেও কলে জয়েন করতে হবে। চল চল প্যারামাউন্ট বন্ধ হয়ে যাবে।" তখনো আমার হাত কাকার হাতে...সেদিকে তাকিয়ে, "তোর ওরিয়েন্টেশন বদলে গেল কবে!"
- না ইনি বলছিলেন আমার চাকরি হবে না আর আমার আর "ইয়েই" আমার স্ত্রী। কি করি বলতো।
কাকা এর হাতটাও একবার?.....
কাকা ভীষন রেগে বিড়ি ধরিয়ে মুখ ঘুরিয়ে নিলেন।
কী ভুলটা বলেছিলাম হ্যাঁ? -_-
No comments:
Post a Comment