Saturday, March 14, 2020

বালীতে কদিন(তিন)

আগের পর্ব

বালীতে এ কদিন সমিদ্র সৈকত দেখলাম, বালিনিজ নাচ দেখলাম, কিন্তু মানুষজন এর সাথে কথা আর হল কই তেমন, রেভো আর সুর্য ছাড়া। এদিকে কোথাও গেলে সেই জায়গার রাস্তায় না হাঁটলে আমার স্বস্তি হয়না, ঘোরাঘুরি ঠিক হয়েছে বলে বোধ হয়না। এদের গান কেমন, সুর কেমন, বাড়ির ভিতরটা কেমন হয়? শান্ত শহরের বুকে ধানক্ষেত দেখেছি,  বিস্তীর্ণ ক্ষেত দেখা হয়নি , পরিষ্কার তকতকে রাস্তা, হর্ণ বাজিয়ে বিরক্ত না করার ভদ্রতা দেখেছি কিন্তু মন চাইছিল অন্য কিছু আরো। বলতেই পারো,  এ কেমন লোভী মন হে তোমার, এত সুন্দর সুন্দর পাহাড়ের ধার থেকে সমদ্র সৈকত, এত চমৎকার নীল জল, পাহাড় পাশে নিয়ে সমুদ্রের মধ্যে বোটে করে দ্বীপে যাওয়া তাতেও মন ভরছে না? আরো চাই? সত্যি বলতে এই তিনদিন চমৎকার কেটেছে, জায়গাটা নিয়ে অভাব অভিযোগ দূরে থাক মন ভরিয়ে দিয়েছে। নুসা দুয়াতে ডিপ সি ডাইভ করেছিলাম, সেইটে খালি তেমন জুতের লাগেনি। ইকুইপমেন্টটা ভালো ছিল না তেমন আর এর চেয়ে ঢের বেশী মাছ আর কোরাল আন্দামানে দেখেছিলাম। যাই হোক আসলে তো বালী মানে স্রেফ এই সমুদ্র না,  এদের সংস্কৃতিও বহু বহু দিনের। আমরা সেসবের স্বাদও নিতে চাইছিলাম। তাই আজ থেকে আমরা কুটা ছেড়ে উবুদেই থাকবো আর উবুদ থেকেই চারপাশ ঘুরবো। উবুদ হল এদের সাংস্কৃতিক রাজধানী। ছোট্ট শান্ত প্রাচীন একটা শহর।


সকাল বেলা আজ প্রথমে যে মন্দিরে গেলাম তার নাম তামান আয়্যুন।  এখানের সব মন্দিরের গেট দ্বিখণ্ডিত দুই খানা প্রতিসম পাথরের। দরজা থাকেনা কোনো। বলা হয়, এই গেট আসলে শুভ আর অশুভের গন্ডী। শিবের সাথে মাউন্ট মেরুর একটা যুদ্ধ হয়েছিল নাকি, আর তারপর তাকে ভাগ করে দেয়।ভাঙাচোরা ইংরিজিতে যতটুকু বোঝা যায় আর কি৷ তামান আয়্যুনে ঢোকার মুখে বিভীষণ বা যক্ষ জানিনা কে, দেখি জবা গুঁজে দাঁড়িয়ে আছে। লোকজন বেড়াতে গেলে কেমন সুন্দর জামা জুতো পরে পোজ দেয়, আমরা দুজন এই জবা গোঁজা যক্ষ বা বিভীষণ কে ভেঙিয়ে ছবি তুলে বেড়ালাম। বালীর মন্দিরের আরেকটা বিশেষত্ব হল  প্যাগোডা স্টাইলের চূড়া। প্রথমে গেট তারপর পার হয়ে খানিক খোলা চত্বর আর গান বাজনা করার উঁচু জায়গা তারপর পেরিয়ে মূল পুজো করার জায়গা যেটা সেইটাই ওরকম চূড়া করা। বেশ লাগে দেখতে। বালীনিজরা এমনতে বেশ পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন,  আর এরা দক্ষিণ ভারতীয় সংস্কৃতির সাথে মূলতঃ বানিজ্য করেছে বলেই তাদের প্রভাবও বেশী পড়েছে। যেমন প্রতিটা মন্দির অত্যন্ত পরিচ্ছন্ন, দক্ষিণ ভারতীদের মতই নিম্নাঙ্গে সারং জড়িয়ে ঢুকতে হয় প্রতিটা মন্দিরে (তা যদি চালু থাকে)। প্রচুর গাছপালা দিয়ে ঢাকা এই তামান আয়্যুন এর চত্বর। এইটায় অত ট্যুরিষ্ট নেই।  বেশ শান্তি শান্তি লাগে ভীড়হীন জায়গাটা।
এই সে জবাপ্রেমী যক্ষ

বালিনিজ গেট , প্রতিটা মন্দির বাড়িতে ঢোকার মুখে এরকম থাকবেই, আর দূরে সাহেবগুলো সারং পরে চলেছে

মন্দিরে ঢোকার মুখে


ঢোকার পরেই যেসব জায়গায় থাকে অনুষ্ঠানের জন্যে

প্যাগোডা আকৃতির মন্দির।।বালির মন্দিরে বৈশিষ্ট্য

তামান আয়্যুন মন্দির



বালীদ্বীপের আরেকটা দারুন জিনিস হল রাইস টেরেস। মানে পাহাড়ে ধাপ কেটে ধান চাষ। এবং সেটা একটা বিস্তীর্ণ অঞ্চল জুড়ে। বালিতে দুটো বিখ্যাত রাইস টেরেস আছে, জাটিলুই আর টেগালালং। এরমধ্যে জাটিলুই উবুদ থেকে একটু দূরে,পাহাড়ের উপর যেতে হবে গাড়ি করে, দূরে বাটিকারু আগ্নেয়গিরি দেখা যায় এখান থেকে। জাটিলুই আবার ইউনেস্কোর ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইট। এখানে যেতে গেলে টিকিট লাগে, প্লাস একটু দূরে তাই এখানে লোকজন কম আসে খানিক। এলেও ভারতীয় লোকজন কম কারন উবুদের একদম কাছেই টেগালালং,  তাছাড়া বেশীরভাগ ভারতীয়দের প্ল্যানে  টেগালালং, কফি প্লান্টেশন, ওয়ানাগিরিতে দোলনায় ছবি তোলা একটা প্যাকেজে থাকে। খারাপ কিচ্ছু না,  কিন্তু আমরা সেটা চাইনি, একটু কম ভীড় তুলনামূলক ভাবে  কম এক্সপ্লোরড জায়গায় ঢুঁ মারতে চেয়েছি, তাছাড়া কফি প্ল্যান্টেশন দেখার চেয়ে আমরা হাইকিং করতে বেশী উৎসাহী ছিলাম। কম এক্সপ্লোরড মানে এমন না একেবারেই লোক নেই, আছে, তবে বেশ খানিক কম। যাই হোক, তামান আয়্যুন থেকে ছায়া ছায়া গাছ ঢাকা রাস্তা দিয়ে চললাম। সরু রাস্তা,  পাশেই জমি,  গ্রামই একটা, কিন্তু বড় সুন্দর বড়ই মনোরম। হর্ণ দেওয়ার প্রশ্নই নেই, ওভারটেকও করেনা কেউ চট করে, রাস্তার দুপাশে জঞ্জাল বা বাইক,ঠেলা রেখেও দেয়নি কেউ। আচ্ছা আমরা এমন হতে পারিনা কেন? স্রেফ পপুলেশন দায়ী না, আমরা আসলে স্বভাবে ইন্ডিসিপ্লিন্ড, নিয়ম ভাঙাতে আমাদের বীরত্ব! তাতে আর পাঁচটা লোকের অসুবিধে হলেও। মাঝ রাতে আমাদের বাড়ির সামনে দিয়ে বাইক যায় পাড়া কাঁপিয়ে, হর্ণ বাজিয়ে...কোনো দরকার নেই কিন্তু ওই, নিজেকে প্রদর্শন করা হবে কুৎসিত ভাবে হলেও!  

চলতে চলতে মাথায় মেঘ নিয়ে বাটুকারু পাহাড় দেখা দিল, একটা ছোট বসতি অঞ্চল পেরোচ্ছি সে সময়। এখানে প্রতিটা বাড়ি বা দোকানই সকালবেলায় ভগবানের উদ্দেশ্যে ভোগ নিবেদন করে ছোট্ট কলা পাতার তৈরী পাত্রে। নির্দিষ্ট কিছু জিনিস নেই,  আমি সেই উৎসর্গে পয়সা কেবলমাত্র একটি ক্ষেত্রে দেখেছি আর একটাও না। কেউ বিস্কুট দিয়েছে দেখেছি, কেউ দিয়েছে বাতাসা, এমনকি ডিম দিতেও দেখেছি। আমি যা খাই ভগবানকে তা থেকে বঞ্চিত করার কী আছে এমনই ভঙ্গী। ছোট্ট জনবসতিটা পার হচ্ছি যখন সার সার বালীনিজ বাড়ি, আর তাদের সামনে বেদী মত করা সেখানে পুজো নিবেদন করা, সোজা রাস্তার মিট করছে মেঘ মাথায় করা বাটুকারুকে। আহা ভগবান থাকলে এমন ভাবেই থাকা উচিত, রাজার মত, মন্দির এর ঘুপচিতে না ।
এই যে বেদী করে ছোট্ট ছোট্ট হাতে তৈরী ডালা দিয়েছে

দেবতার জন্যে নিবেদিত...রাস্তা

জাটিলুই পৌঁছেই মনটা ভরে গেল। আজ রোদ ওঠেনি, মেঘলা আবহাওয়ায় পাহাড় ঘেরা এই রাইস টেরেস যেন শান্ত করে দেয় বুকের কাছটা৷ সেই নবম শতক থেকে সমবায় পদ্ধতিতে জল বাঁটোয়ারা করে, পার্সিয়ান হুইল ইরিগেশন ব্যবহার  করে। একই পদ্ধতি এখনো চালিয়ে যাচ্ছে। ওদিকে পাহাড়ের মাথার মেঘগুলো ছুটোছুটি লাগিয়েছে,আমরা টুকটুক করে হাঁটা শুরু করলাম  পাহাড়ি ধান জমির মধ্যে দিয়ে। ছশো একর জমির পুরোটা হাঁটবে অর্থাৎ লং ট্রেক রুট নেবে না শর্ট তা ঠিক করে  তীর চিহ্ন দিয়ে আঁকা পথ ধরে গেলেই হবে। পাথুরে রাস্তা ধরে আমরা শর্ট ট্রেকটাই নিলাম। তাতেও মিনিট চল্লিশের হাঁটা হবে টুকটুক করে। জমিতে মাঝে মাঝে হাওয়া মোরগের মত কি একটা লাগানো আছে, হাওয়া দিলেই ভারী মিষ্টি ঝিরঝিরে একটা শব্দ বয়ে যাচ্ছে।


মাঠে আলো দেবার ব্যবস্থা







মিষ্টি ভাসী হাওয়া ঘন্টি

যেতে যেতে একজন স্কুটার আরোহী চাষীর সাথে মোলাকাত হল। টোকাই, সারং আর মালপত্র নিয়ে সে ফিরছে এখন জমি থেকে।  দূরে একজন লোক সার ছড়াচ্ছে জমিতে। পেঁপে গাছ ছিল একটা রাস্তার পাশে, সেটা দেখে ভারী একটা আপনজন আপনজন ফিলিং হল।  কী অদ্ভুত না! জানিনা সবার হয় কিনা কিন্তু নিজের দেশে গাছ, ফুল দেখলে ভারী একটা আহ্লাদ হয় বিদেশে। আরো কয়েকধাপ নামতে পাহাড়ের কোলে একটা লোক ছাউনি বেঁধে বাজনা বাজাচ্ছে। জলতরঙ্গের মত,ঝিরঝিরে বাতাসের মত এদের বাজনার আওয়াজ। সে আওয়াজে মন্ব বেশ একটা প্রসন্ন,  হালকা স্ফূর্তির ভাব আসে। একথা শুনে মনে হতে পারে হুড়ুমদুড়ুম পাঞ্জাবী পার্টি সং বলছি হয়ত, তা না কিন্তু একেবারেই,ভারী মোলায়েম একটা ভাব। আমি বাজনা বাজাতে পারিনা, রাগ সঙ্গীত বুঝিনা বলে বোঝাতে পারলাম না সঠিক করে। সে যাই হোক, আরো খানিক এগোলে, খুঁটি বাঁধা ছোট্ট দু চারট্র দোকানে হরেক রকম চাল,  ডাব, চালের পাঁপড় এসব বিক্রী হচ্ছে। আমরা কিসের একটা পাঁপড় মত কী একটা কিনলাম যেন, মন্দ না, খুব আহামরি কিছুও না।
পাথুরে পথ এবার চড়াই, নালা দিয়ে জল আসছে বাঁ হাতে ডান হাতে জঙ্গল থেকে পাখির কিচমিচ ভেসে আসছে রাস্তায় আর কেউ নেই স্রেফ আমরা দুজন। দূর থেকে জাটিলুই এর হাওয়া ঘন্টির আওয়াজ আসছে টিংটিংটুংটাং করে, সব মিলিয়ে মনে একটা শান্ত দুপুর বুকের মধ্যে স্থায়ী আস্তানা গেড়ে নেয়।




বাজনদার





চাষীর সাথে আলাপ করছিলাম ফসল নিয়ে🤴 





ছাতা উঁকি মারছে...আমাদের আর রোমান্টিক ছবি হবে কী করে!



রেভোর সাথে ফের চলা শুরু। উলুন দানু বেরাতন লেক মন্দির যাব। এইটা একটা হেব্বি  লোকেশনে। পিছনে পাহাড়, সেই পাহাড়ে মেঘের দল হাওয়া খেতে বেরিয়েছে। পাহাড়টার পা ধুইয়ে দিচ্ছে লেকের জল আর  লেকের পাড়েই এই মন্দির। বেরাতন লেক খুবই গুরুত্বপূর্ণ  এদের, সেচ আর জল সাপ্লাইতে। তাই জন্যেই মনে হয় এই মন্দিরটায় ভীড় বেশী। প্রচুর লোক সাদা সারং আর কুর্তা পরে পুজো দিতে এসেছে ডালি নিয়ে। বুদ্ধ স্তুপের মতও আছে এক জায়গায়। মেইনলি এটা শিবের মন্দির।তবে এখানের কোনো মন্দিরেই মূল গৃহে প্রবেশে অনুমতি নেই পর্যটকদের জন্যে। সেটা স্রেফ "অফারিং টু গড" এর জন্যে।







ওয়ানাগিরি জায়গাটাও বড় সুন্দর, ওটা পার করেই যেতে হয় বন্যুমালা ওয়াটার ফলস। ফেরার সময় দাঁড়াবো একবার ওয়ানাগিরিতে আপাতত বন্যুমালাই হোক। বন্যুমালাতেও লোকজন বেশী যায় না। ওয়াটার ফলস মানে ভেবেছি, পাহাড়ের গোড়ায় গাড়ি নিয়ে গিয়ে থামাবে। তারপর দু কদম গেলেই পাবো, ওবাবা তা নয় মোটেও! যেখানে থামলো গাড়ি, তার থেকে বেশ খানিক উৎরাই ভেঙে পৌঁছনো গেল এক জায়গায় যেখানে লেখা "ওয়েলকাম টু বন্যুমালা",  পাশেই কাঠের ছোট্ট ঘরে টিকিট কাটছে দু চারজন। ঐ খান থেকে এইসান উঁচু উঁচু সিঁড়ি ( প্রায় কোমরসমান একেকটার সাইজ) ভেঙে নামতে লাগলাম। খানিক পর সিঁড়ি একেবারে খাড় নেমে গেছে, কিন্তু নেমে নেমে যাচ্ছে কোথায় রে বাবা। এই পাহাড় বেয়ে উঠতে হবে আবার ওরে বাবা! সেও না হয় হল কিন্তু আর তো পথ নেই সামনে মনে হচ্ছে! দূরে কোথায় একটা জলের আওয়াজ শোনা যাচ্ছে বিটে কিন্তু সামনের রাস্তাটা তো জলে ভেজা,  ফার্নে ঢাকা মনে হচ্ছে। এখানের পর রাস্তা কই?! থমকে দাঁড়াই এদিক ওদিক দেখি, আর তো কোনো রাস্তা দেখাও যাচ্ছে না! তাহলে? দোনোমনা করে এগিয়ে গেলাম। ময়ূরাক্ষীরই হঠাৎ চোখে পড়ল, 'আরে ওই দেখো,  ওইতো কোন থেকে ফের নেমে গেছে রাস্তা।' দূর থেকে আসা জলের আওয়াজ এর সাথে মিশে যাচ্ছে পাহাড়ের গা বেয়ে চুঁইয়ে পড়া টুপটুপ জলের শব্দ।ফার্ন, মস ঢেকে দিয়েছে পাথুরে দেওয়াল, রাস্তা ক্রমে আরোই পিচ্ছিল আর খাড়াই নামা। সমস্ত এলাকাটা সবুজে ঢাকা, জঙ্গল এর মধ্যে আসলে এই প্রপাতটা। বনের মধ্যে থেকে তীব্র শব্দ আয়াছে একটা পোকার ডাকের। এছাড়া আর কোনো শব্দ নেই সমস্ত চরাচরে। কিরম আচ্ছন্ন লাগছিল। অবশেষে পৌঁছনো গেল। এটাকে জলপ্রপাত বলাটা বাড়াবাড়ি, বড় ঝর্ণা বলা যেতে পারে। অনেকগুলো ধারা আছে অবশ্য। জলটা এসে একটা গোল মতো জায়গায় জমা হয়ে তারপর পাহাড়ি নালা হয়ে নেমে আছে। পুরো জায়গাটায় সেই পোকার আওয়াজটা ছাড়া আর কেউ নেই। ওই জলে অবগাহন করতে হয়। ডুব দিতে হয় এই পাহাড় জঙ্গলের মধ্যে। কতক্ষন পরে কে জানে আরো দুজন এলো। এর মধ্যেই বৃষ্টি শুরু হক টুপটুপ করে। ফেরার পথে আরো পিচ্ছিল হয়ে গেছে সব জায়গাটা। আরো নিস্তব্ধ যেন। আদিমকালের কোনো দুপুর যেন, জঙ্গল আর আকাশ ছাড়া যেখানে আর কোনো উপাচার নেই, প্রকৃতি নিজেই যেন ডুব দিয়েছে নিজেতে।


আমরা

ছবিতে আসলে বোঝাই যাচ্ছেনা কত সুন্দর ছিল জায়গাটা


রাস্তা

গাড়ির কাছে অব্দি আসার পথে দেখা হল এক চাষীর সাথে। সে একবিন্দুও ইংরেজি বোঝে না, তার জমিতে কী চাষ হয়েছে জিজ্ঞেস করলাম সে কী যেন বলল, দুজনেই হেসে চলে গেলাম যে যার রাস্তায়। এ মন্দ না তাই না? কেউই কিছু বুঝলাম না, অযথা কথাও হল না। ফেরার পথে ওয়ানাগিরিতে একবার থামা গেল। পাহাড় আর লেক মিলে এখান থেকে ভিউটা চমৎকার।  দোলনা, ইত্যাদি আছে ছবি তোলার জন্যে, কিন্তু হাইকিং করে জলে ভিজে আমাদের চেহারা বেশ খোলতাই হয়েছে তখন। খামোখা পয়সা দিয়ে অমন কাকতাড়ুয়া ছবি তোলানোর দরকার নেই।  বরং শান্ত হয়ে দু চোখ ভরে পুরো প্রেক্ষাপটটা দেখতে বেশী আনন্দ।  কানের মধ্যে বুকের মধ্যে তখনো আসলে বন্যুমালার শান্তিটা রয়ে গেছে বলেই হয়ত....
(ক্রমশ)

4 comments:

  1. Out of all 3 episodes, this touches my heart most, carry on your writing!

    ReplyDelete
    Replies
    1. অনেক অনেক ধন্যবাদ অর্ণবদা। আসলে জায়গাটা বড়ই সুন্দর ছিল

      Delete
  2. এইটা বেস্ট হয়েছে। চালিয়ে যাও।

    ReplyDelete