Wednesday, November 6, 2019

আর ইউ হ্যাপি?

#হিজিবিজি 

হ্যাপি কথাটার মানে কি সুখী না খুশী? নাকি দুটোই? দুটো একসাথে না হবারও তো কিছু নেই।  আমাদের আপিসের এক ছেলে,  বিদেশে বিস্তর টাকা মাইনের চাকরি পেয়েছে। টাকার অংকটা এমনই বাড়িতে, পুরোনো আপিসে কোত্থাও আটকাতে পারেনি কেউ, সে নিজেও না। নিজেকেই যুক্তি দিচ্ছিলো, "বাইরে আমি বিএমডাব্লিউ X সিরিজ চালাবো এখানে হলে আইটেন,  কেন যাবনা বলতে পারো?" 

ঠিকই হয়ত। আবেগ দিয়ে বোকারা চলে, তাদের উন্নতিও কম হয়ত তাই। আচ্ছা তাহলে আড়াইহাজার বছর আগে যে রাজপুত্র রাজপ্রাসাদ,  রাজভোগ ফেলে রাস্তায় নেমেছিল সে কি বোকা? তবে সে বোকাকে দেখেই কেন মনে হত লোকের যে লোকটা জানে শান্তি কি, অবিচল থাকলেও রোবট হবার দরকার নেই! 

আমার এক বন্ধু আছে ডাক্তার মানুষ। ডাক্তার হয়েও মোটামুটি আমার মতই অবস্থা তার,  যদিও আমাদের দেশে অন্তত (বিদেশের কথা জানিনা), তার আরো অনেএএক গুন রোজগার হবার কথা। তাকে জিজ্ঞেস করেছিলাম,  তোর আপশোষ হয়না? হাসেনি, বলেছিল, "কি জানিস, বন্ধুদের সাথে বেরোলে একেবারে কি মনে হয়না কখনো? হয় তো। তবে কি জানিস, যখন নিজের জন্যে অনেকটা সময় বাঁচিয়ে,  নিজের মত কাটাতে পারি জীবনটা, আর আপশোষ হয়না।" 

আসলেই তাই মনে হয়, এত খারাপ লাগা,  অসুখে থাকা আসলেই অন্যের সাথে তুলনায়। ও এই করেছে আমি কী করলাম এই ধারণা কবে কেমন করে ঢুকিয়ে দেওয়া হয়েছে আমাদের অজান্তেই। তাই আমাদের যাই থাকনা, হ্যাপ্পিনেস নেই। 

আমাদের মনে হয় আরেকবার ভাবার সময় হয়ছে, আড়াইহাজার বছর আগেকার কথাগুলো, অন্তত এখনকার মত করেই। রোজ রোজ এত মানুষ এত দৌড়চ্ছে, এত মদ এত জুয়া এত রোজগার কিন্তু কিসের জন্যে করছি? কী পাচ্ছি ঠিক? দামী দোকানে খাওয়া, দামী জামা পরা, দামী জায়গা থাকা৷ দামী গাড়ি চড়া.... নিঃসন্দেহে এগুলো আকর্ষণীয়, কিন্তু ছায়া ঢাকা শান্ত জীবনের মত শান্তির কি? আমি ঠিক জানিনা। আমার সেই জীবনটায় গিয়ে দেখতে ইচ্ছে করে, যেখানে এক সংসার ভরা লোকের মাঝে একদম কিচ্ছু না করা দু একটা লোক থাকে, যারা কিছু করেনা তবুও তাদের বাতিল বলে ত্যাগ করে না কেউ, বাড়িতে ভিখারী আসলে তার বরাদ্দ চাল, আলু থাকে। বিকেলে ঘুড়ি ওড়ানোর সময় থাকে, পাঁচ সাতদিন এমনিই কোনো জায়গায় যাওয়ার থাকে সব দেখবো ওই সময়ে এইরকম ভাব না নিয়ে।জানিনা, হয়ত আমার সে জীবন সইবেনা, সওয়ানোর মত মন আছে কিনা কে জানে! ডুব দেবার মত মন..... যখন  কেউ বলবে কোথাও থেকে,  তুমি সফল? সুখী? আমি হাসব খালি তাতেই সব জবাব হয়ে যাবে.....

4 comments:

  1. আমার বন্ধুত্ব ত্যাগ দেওয়ার পেছনে এটাও একটা কারণ, প্রদীপ্ত। যখন নিজের জীবনটা নিয়ে থাকি, দিব্যি সুখী, তৃপ্ত মনে হয় নিজেকে। যে মুহূর্তে অন্য কারও সঙ্গে দেখা হয়, তার জীবনটার তুলনায় নিজেরটা এত অপ্রতুল ঠেকে। দোষ আমার পরশ্রীকাতরতার। আমি কুঁড়ে মানুষ, পরশ্রীকাতরতা সারাতে বসার থেকে তাকে যথাসম্ভব এড়িয়ে চলার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।

    ReplyDelete
    Replies
    1. ভালোই করেছ কুন্তলাদি। এই যে ফেসবুক বলো বা অন্য সোশ্যাল মিডিয়া বলো, এত ভালো আছি দেখাতে চায় কেন? আর এই দেখতে গিয়ে আমাদের মনে ঢুকে যায়ভতাহলে বুঝি আমি অসফল! আসলে অতটা খারাপ আমরা নেই কিন্তু!

      Delete
    2. খারাপ তো নেইই। দরকারের বেশি খাচ্ছি, পরছি আবার জমাচ্ছিও! আর সোশ্যাল মিডিয়ার ওটা আরেকটা রহস্য। সবাই এত ভালো আর সাকসেসফুল কী করে?

      Delete
    3. একদমই তাই। তবু আরো ভালো থাকার লোভ দেখানোটাই সোশ্যাল মিডিয়ার দস্তুর মনে হয়

      Delete