Wednesday, September 18, 2019

বিশ্বকর্মা

বিশ্বকর্মা তো অত খাতির পাওয়া ঠাকুর না, নতুন জামা জুতো, সারারাত আলো কিচ্ছু না। রিকশাওয়ালাদের নতুন গেঞ্জি পরে তদারকি করা ঠাকুর, মেশিন আর ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের ঠাকুর।  রাস্তায় বেরোতেই দেখি সব গাড়ি, রিকশা, অটো ঝকঝক তকতক করছে৷ কেউ কলাগাছ বেঁধে কেউবা ফুলমালা,  কেউ চকমকে কাগজ দিয়ে সাজিয়েছে নিজেদের গাড়ি৷ আমাদের গ্রামের বাড়িতে একটা চালকল আছে, মানে বড়সরো না, গ্রামের লোকজনই খোরাকির ধান ভাঙাতে আসে। সেখানেও আজ পুজো হয়, আর কদিন বাদেই পুজো এলো বলে। আকাশে একটাও ঘুড়ি নেই দেখলাম, হয়ত উড়বে পরে কখনো। কিংবা উড়বেই না, নিউ জেনারেশন মেঘেরা ঘুড়ি পছন্দ করেনা হয়ত।

আমার দুঃখিনী গাড়িটা ধুলো ময়লা পরাই আছে। আমি ঠাকুর দেবতায় বিশ্বাসী না,  তাই আমার অবিশ্বাসের মূল্য চুকিয়ে আমার গাড়ি ম্লান মুখে চারদিক দেখতে দেখতে যায়। আচ্ছা আচ্ছা মন খারাপ করিসনি, এই সপ্তাহেই ঝাঁ চকচকে করে তুলবো খুব করে। অফিসে বেসমেন্টে মেশিন আছে যেখানে ওখানে বিশ্বকর্মা পুজো হয় প্রতিবছরেই। আলপনা আঁকা, সাজানো পুজো পুজো গন্ধওয়ালা বেসমেনড়ে খিচুড়ি আর আলুরদম খাওয়াচ্ছে। আমার এই সব জায়গায় আসলেই খুব ইচ্ছে করে কোর সেক্টরে চাকরি করতে। প্ল্যান্টে কাজ করতাম বেশ, ফ্যাক্টরির মধ্যে সাইকেল চালিয়ে দুপুরে খেতে আসতাম। রাতে ঝুপ করে রাত নামতো, সকাল হত তাড়াতাড়ি। 

বিশ্বকর্মা মনে হয় সেই ছেলেটার মত, আনস্মার্ট, ইংরাজিতে অদক্ষ, কিন্তু কাজটা জানে খুব। ঝলমলে শহরে তেমন পাত্তা পায়নি, কাউকে জানাতেই পারেনি সে কতটা পারে,তারপর নিজেও ভুলে গেছে সে কতটা পারতো....

No comments:

Post a Comment