নতুন একটা রোগ বাজারে এলো বলে , মানে ডাক্তারদের সিলেবাস আপডেট করতে হলো বলে। ইন্টারনেটে নাম পাওয়া যায় অবশ্য এ রোগের কিন্তু সেই অর্থে সমস্যা বলে ডিক্লেয়ার্ড না বোধহয় । ফেসবুক অ্যাডিকশন সিন্ড্রোম । আমার যেটা হয়েছে। খাই দাই বগল বাজাই এর বদলে খাই দাই ফেসবুকাই। সারাদিন অনলাইন সারাদিন !! নিজের উপর বিরক্ত হয়ে গেলাম মশাই। চোখ কন কন করছে মাথা ঝনঝন করছে তবু করছি। কেন করছি? কারণ কি? অস্বাভাবিক কনসেনট্রেশন সমস্যা হয়ে গেছে। একটানা কোনো কাজ করতে পারিনা , নেশার দাস বুঝতে পারি তবু কেন করে চলেছি ? এমন তো না আমার হাতে অঢেল সময় এসে গেছে বা হঠাৎ করে আমি দারুন লিখতে শুরু করেছি আর ফেসবুকে আমার পাঠক পাঠিকারা অপেক্ষা করছেন কখন আমি বাণী দেব। আমি না গেলে ফেসবুকে কারো কিচ্ছু যাবে আসবে না ,এ সত্যি জেনেও , কারোর মতবাদে আমার কিচ্ছু যাবে আসবে না এ তথ্য অনুধাবন করেও কেন যাই ? উত্তরটা যাই হোক না কেন সমস্যাটা রয়েই যায় , আমি ফেসবুক ছাড়তে পারছি না। এমন না আমি সারাক্ষণ যা খাচ্ছি যা পড়ছি তাই আপডেট দিচ্ছি কিন্তু সময়টা দিয়ে দিচ্ছি। একটা গল্প পড়েছিলাম, একবার একজন আফশোষ করছে যদি আর পাঁচ মিনিট আগের সময়টায় পৌঁছনো যেত তাহলে একটা বিরাট ডিল ফিক্স করা যেত , সেই সময় একজন হঠাৎ উদয় হয় বলে আমি তোমায় ওই সময় ফিরিয়ে নিয়ে যেতে পারি কিন্তু তাতে তোমায় আমার তোমার আয়ু থেকে পাঁচ মিনিট দিয়ে দিতে হবে। লোকটা ভাবে মাত্র পাঁচ মিনিট জীবন থেকে গেলে কি এমন হবে, এই ভেবে সানন্দে রাজী হয়ে যায়, এবং এই প্রসেস চলতেই থাকে, মানে প্রায়ই আগের কোনো সময়ে চলে গিয়ে সেটা ফিক্স করে আর তার আয়ু থেকে খানিকটা সময় চলে যায়। এই ভাবে বেশ কিছুদিন চলার পর দেখা যায়, সে তার জীবনের বেশ অনেক গুলো বছর সে লোকটাকে দিয়ে দিয়েছে, তার আয়ুরেখা কমে গেছে। শেষটা কি ছিলো মনে নেই, কিন্তু ফ্রি এর ফেসবুক কি আমাদের সেরকম আয়ু কেড়ে নেওয়া জিনিস হয়ে দাঁড়াচ্ছে না?
তবে কি জানেন তো, আমি ভার্চুয়াল দুনিয়ার বাইরেও খুব ইন্টারেস্টিং কিছু পাইনা যাতে মনে হয় আমি নেটে সারাক্ষণ থেকে খুব অপরাধ করি। আমার রিয়েল লাইফ এমন বন্ধু নেই যাকে রাত বারোটায় বা সকাল সাতটায় ফোন করা যায় অনায়াসে, আমার মন খারাপ হলে বরং ফেসবুকে হিজিবিজি ভাট বকে সময়টাকে বইয়ে দিতে পারি। তবু তবু আমি ফেসবুক থেকে, মেসেঞ্জারে আড্ডা থেকে খানিকটা সময় সরে আসার চেষ্টা করছি কারন বেঁচে থাকার জন্য কিছুর উপর ডিপেন্ডেন্ট হয়ে যাওয়াটা খুব রিস্কি বলে মনে হচ্ছে। অবশ্য আমি এমনিতেও খুব বেশী কারণ পাইনা বেঁচে থাকার, মানে খুব ডিপ্রেসিভ কথা বলছি হয়ত কিন্তু আমার মনে হয় আমারা বিবর্তন কে উলটোপথে হাঁটানোর চেষ্টা করছি বলেই এত সমস্যা। আমার মত কয়েক কোটি লোক স্রেফ এম্নিই বেঁচে আছি কোনো উদ্দেশ্য ছাড়াই তার ফলই হয়ত অন্যভাবে আসছে। কে জানে।
তোমার এই পোস্টটা পড়ে এত রকম কথা মনে হল, প্রদীপ্ত, যে কোনটা লিখব বুঝতে পারছি না। নেশা খারাপ, কিন্তু অনিবার্য। ফেসবুক না থাকলে অন্য নেশা সে জায়গা নেবে। তবে সোশ্যাল মিডিয়ার নেশাটা বোধহয় খারাপ এই জন্য যে সেটাতে অন্য মানুষ ইনভলভড থাকে। আর সে জন্যই ঝঞ্ঝাট বেশি। অবশ্য মানুষ (বা ঝঞ্ঝাট) থাকে বলেই নেশা এত বেশি বোধহয়। তোমার নেশা কাটানোর চেষ্টার প্রতি শুভকামনা রইল।
ReplyDeleteঠিক নেশা অনিবার্য , কিন্তু আমার ছোটবেলার সঙ্গী বই পড়ার নেশাটা চলে যাচ্ছে । ফেসবুকে সারদিন এত কিছু পড়ি তাই জন্যই হয়ত । যাই হোক দেখা যাক অন্তত কয়েকদিন পারা যায় কিনা :D । শুভকামনার জন্য ধন্যবাদ :) ।
Delete