Saturday, April 16, 2016

বসন্তে বরফে

ধরা যাক শুক্রবারের রাত বৃষ্টি দিয়ে সুরু হয়েছে, এবং আপনি জানেন শনিবার ও রবিবার স্নো স্টর্ম এলার্ট আছে। ভরা বসন্তে। অবশ্যই শীতের দেশের  কথা হচ্ছে এখানে।  গাছ-টাছ গুলো পুরো  ঘেঁটে গেছে, বল ভাই ফুল ফোটাবো না ফোটাবো না।  ওসব ফুল ফুটুক না ফুটুক জাতীয় কাব্য করা পোষাচ্ছে না আমদের।  সারা শীত অপেক্ষা করে সবে একটু মাঞ্জা মারতে লেগেছি আর সেসময় এইসব ঝকমারি ভাল্লাগেনা সত্যি! তা আমি এসব কথা জানি কারণ আমার তো নির্বাণ লাভের বিশেষ বাকি নেই , আমি হত জন্মে কি ছিলাম কিঞ্চিত বুঝতে পারি , আগামী দিনের শিষ্য শিস্যাদের জন্য এগিয়ে রাখছি আর কি।  আমি আগের জন্মে গাছ ছিলাম , তাই এ জন্মে আমার এক জায়গায় থিতু হতে এত আপত্তি , বোর ভাবটা এখনো এজন্মেও আছে আর কি।  আর আমার রোদ উঠলেই যে এত ফূর্তি হয় তার কারণও ওই পেটুক মানুষ তো তাই আগের জন্মে কিসে খাবার দাবার বানানো যেতো সেটা এ জন্মেও মনে রেখে দিয়েছি আরকি। তো যা বলছিলাম , সকাল বেলা খামোখা ঘুম ভাঙ্গার যেদিন কারণ থাকবেনা সেদিনই তাড়াতাড়ি ঘুম ভাঙবে , আড্ডা মারার যখন কেউ থাকবেনা আড্ডা পাবে এসব তো চিরন্তন সমস্যা ও আজকাল আমি গায়ে মাখিনা। তাই চোখ মটকে , কম্বল চাপা দিয়ে ভাবছিলাম ঠিক কি বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি অবলম্বন করলে শুধু  এবং শুধুমাত্র নাকটা বাইরে বেরিয়ে থাকবে, বাকি সমস্ত চোখ কান মাথা ঢাকা থাকবে। আর সেই সঙ্গে ফেসবুক আর চ্যাট কর্তে কোনো সমস্যা থাকবে না. তা উত্তর যে আসবেনা তা তো আমরা জানিই(অবশ্য বদলে তুমি বলে কে  আসার কথা সেও আসেনা) , কিন্তু এক বন্ধুকে খুব বেশি জ্বালাতন করায় একখান আইডিয়া দিলো অবিশ্যি।  ওই সেই হতোনা ছোটবেলায় কিছু জিনিস নিয়ে ঘ্যান ঘ্যান করলে হাতে একটা কিছু ধরিয়ে দিয়ে বলতো যাহ পালা এটা নিয়ে, বা কই দেখি কে আজকে তাড়াতাড়ি ঘুমোতে পারে বা কে বেশিক্ষন  চুপ থাকতে পারে সেরকম।  বলল স্নো পরছে যখন যাও না কেন একটা স্নো ম্যান বানাও না , আর শোনো গাজর দিও নাকে , তোমায় ভরসা নেই কাচকলা গুঁজে দিতে পারো। তা প্রথমে আমি বলেছিলাম যে আমি তো বাচ্ছা  ছেলে না , যে স্নো ম্যান বানাবো, সে তখন জ্বালাতনের হাত থেকে বাঁচতে মরিয়া , খুব উত্সাহ দিলো , আরে বাচ্চা বয়েসে কি তোমার ওখানে বরফ পড়ত ? ইত্যাদি ইত্যাদি।  তা বার আমি খেয়ে যাই , খেয়ে গেলামও ( ভালই হয়েছে স্বীকার করি অবশ্যি) জ্যাকেট জুতো গ্লাভস পড়ে  , বাড়িতে যে বাচ্চাটা থাকে তাকেও বললাম কিরে চল  যাবি নাকি। তার মা তো খচে ব্যোম , এই না টিনটিন ওকে আমায় এখন রেডি করাতে হবে। তা আমি তো প্রায় সন্ন্যাসীর লেভেল এর মানুষ , তাই নির্বিকার ভাবে বললাম তা করাও না , আমি অপেক্ষা করতে পারি , কিরে যাবি তো? স্নো ম্যান বানাবো কিন্তু আমি। ব্যাস আর কিছুর দরকার পরে কি।  দুই মক্কেল , বড়া মহারাজ ছোটা মহারাজ চলিলেন, সাগর থুড়ি বরফ সঙ্গমে। তা আমি যেমন বুদ্ধিমান , একখান জায়গায় অনেক স্নো জমা করে স্নো  ম্যান  রূপ দেবার চেস্টা করছিলাম। 
এমনটা শুরুতে আমি করছিলাম 

বাচ্ছাটাই বললো আরে টিনটিন এরকম না , স্নো  ম্যান বানাতে প্রথমে তোমায় একটা বড় আর একটা ছোট স্নো বল বানাতে হবে।  প্রথমে একটা স্নো  বল বানিয়ে রোল  করো  তাহলেই ওটা বড় হয়ে যাবে। আমি দেখলাম সত্যিই তাই। দূর দূর কত কম জেনেও যে মানুষ বাঁচে আমায় না দেখলে বোঝা মুশকিল। তো যাই হোক দুখানা স্নো বল হলো ছোটটিকে বড়র মাথায় বসানো হলো।  গাছের ডাল ভেঙ্গে হাত আর চোখ ও হলো।  কিন্তু ওই নাকেই  সমস্যা। আমার যেমন আমার বানানো স্নো ম্যান এর ও তাই হবে , স্বাভাবিক , কুছ নেহি তো থোড়া  থোড়া  তো হবেই। যতবার আমি গাজর গুঁজি ততবার সে পপাত চ।  এমন কল্লে রাগ ধরে না, দিয়েছি জোরে গুঁজে ব্যাস , আমার স্নো ম্যান এর মুন্ডুও গেলো।  এত সইতে পারে কখনও।  রাগ করে বললাম আমার ক্ষুদে সঙ্গীকে সব ব্যাটা এই গাজরের দোষ।  কিন্তু যথারীতি ছোটরা  জানে বেশি , আমায় বলল  না টিনটিন , আসলে এই স্নোটা তেমন স্ট্রং ছিলো  না। পরেরবার অবশ্য  ভালই হয়েছিলো।  


তারপর আমরা বরফে দৌড়াদৌড়ি করে স্নো  ফাইটও করেছি হু হু।  বসন্ত আসুক না আসুক কত্তা ফূর্তি  বেড়ে হয়েছে।



13 comments:

  1. চমৎকার স্নো ম্যান হয়েছে, প্রদীপ্ত।

    ReplyDelete
  2. Bhalo lagar kono songa hoyna...

    ReplyDelete
  3. দারুণ ব্যাপার কিন্তু!

    ReplyDelete
  4. দারুণ ব্যাপার কিন্তু!

    ReplyDelete
  5. Ebar ektu banan gulo dekh! Snow man ta kintu bhalo hoyeche

    ReplyDelete
  6. Choto belae kichu jinis nie ghyan ghyan er obbhesta to ajo jae ni .. Ar thakleo ba khoti kii ? Ar ha jothariti chotora Jane besiii .. Khik khik .. Lekhata kintu Bess hoeche

    ReplyDelete
  7. Chhotobelay pora ekta Chinese/Russian boi "Khude borof manush" er kotha mone pore gelo. Chaliye jaao ei rakam bhabe.

    ReplyDelete