জ্বর বন্দী ঘর বন্দী....এমন দিনে লোকে কিই বা করতে পারে জানলা দিয়ে বৃষ্টি দেখা ছাড়া। তাও মা চান করতে গেছে বলেই, নইলে জোলো হাওয়া লাগাচ্ছি দেখলেই চেঁচিয়েমেচিয়ে এক করতো। সকালে উঠে ফের ঘুমিয়ে পড়েছিলাম, ঘামে বালিশ চাদর তোশক সব নাকি ভিজে গেছে, কি আশ্চর্য ব্যাপার আমি জানবো কি করে! আমি তো শূন্যে ভেসে বেড়াচ্ছিলাম। জ্বর হলে কষ্টের মাঝেও এই যে ঝিমঝিম ভাব এটাই ভাল্লাগে খালি, স্বপ্ন আর বাস্তব বড় গোলমাল হয়ে যায়। ছোটবেলায় একবার প্যারাটাইফয়েড হয়েছিলাম সেবার প্রথম এই শূন্যমার্গ ভ্রমন হয়েছিলো, সাঁইসাঁই করে কন্ট্রোল হীন হয়ে ওড়াউড়ি। শিব্রাম বলেছিলেন, ঈশ্বর পৃথিবী ভালোবাসায়, অসুখ বিসুখ একাবোকাদের হয়না। মানে এরকমভাবে না ওনার ভঙ্গীতে, তা কথাটা ভুল না, বিদেশে আড়াই বছরে একবার জ্বর, দেশে ফিরে এক বছর না হতেই বারদুই। ওই মা এর কাছে গিয়ে ঘ্যানঘ্যান করা, থেকে থেকে এসে জ্বর দেখে যাওয়া, ওষুধ খাওয়ার তাড়া দেওয়া, মুখে লাগে এমন কিছু বানিয়ে দেওয়া, মধু তুলসীপাতার রস খাওয়ানো, এসব আহ্লাদ পাওয়া না থাকলে জ্বরেরই বা এসে আনন্দ হয় নাকি।
ওদিকে হুল্লাট বৃষ্টি নেমেছে, পানওয়ালা দোকানঘর প্লাস্টিক দিয়ে ঢাকছে, গামছা পরে বিপজ্জনকভাবে একজন বালতিতে জল নিয়ে যাচ্ছে, এই বৃষ্টিতে গামছা পরে জলের বালতি না বইলেই পারতো, যাকগে। ওদিকে ইস্কুল থেকে দুজন ছেলে বাড়ি ফিরছে একখানা ছাতা মাথায়, বেশীরভাগটাই ভিজতে ভিজতে। আমাদের পাড়াটা দুপুরবেলা বুঝি এরকম শান্ত হয়ে যায়? কাল বিকেলে শুয়ে শুয়ে ছটফট করছিলাম যখন কি খারাপটাই লাগছিলো, বিকেলবেলা বাড়িতে থাকা খুব খারাপ জিনিস। একটা রিক্সা প্যাঁকোরপ্যাঁক করতে করতে চলে গেলো। খামোখা হর্ন দিতে দিতে একটা অটো। আমাদের দেশে হবে সেই গাড়ি কবে, হর্নের তারখানি কাটা থাকিবে!
বৃষ্টি কমে এলোলো তারপর, আমার জানলাবিলাসও শেষ, জ্বোরোবাবু ফের ঘুমাতে গেলেন....
***********
ওদিকে হুল্লাট বৃষ্টি নেমেছে, পানওয়ালা দোকানঘর প্লাস্টিক দিয়ে ঢাকছে, গামছা পরে বিপজ্জনকভাবে একজন বালতিতে জল নিয়ে যাচ্ছে, এই বৃষ্টিতে গামছা পরে জলের বালতি না বইলেই পারতো, যাকগে। ওদিকে ইস্কুল থেকে দুজন ছেলে বাড়ি ফিরছে একখানা ছাতা মাথায়, বেশীরভাগটাই ভিজতে ভিজতে। আমাদের পাড়াটা দুপুরবেলা বুঝি এরকম শান্ত হয়ে যায়? কাল বিকেলে শুয়ে শুয়ে ছটফট করছিলাম যখন কি খারাপটাই লাগছিলো, বিকেলবেলা বাড়িতে থাকা খুব খারাপ জিনিস। একটা রিক্সা প্যাঁকোরপ্যাঁক করতে করতে চলে গেলো। খামোখা হর্ন দিতে দিতে একটা অটো। আমাদের দেশে হবে সেই গাড়ি কবে, হর্নের তারখানি কাটা থাকিবে!
বৃষ্টি কমে এলোলো তারপর, আমার জানলাবিলাসও শেষ, জ্বোরো ফের ঘুমাতে গেলেন....
জ্বর নেমে যাওয়ার পরেও জ্বর আচ্ছা হ্যায়। তখন বালিশে ঠেস দিয়ে কম্বল নিরুদ্দেশ থাকে, দিদির ফোন থাকে, বন্ধুদের জ্বালাতন করা যায় ইচ্ছে মতো। ওই এখন না আমার জ্বর এখন কিছু বলতে পারবি বলে সেন্টি দেওয়া আর কি। কতদিন পর মা এর হারমোনিয়াম এ গিয়ে হুজ্জুতি করলাম। ছোটবেলায় বেলোর ফুটোয় আঙুল দিয়ে দিয়ে জ্বালাতাম। মা গান করতে বসলে চেনা মা ছেড়ে অচেনা মা হয়ে যেত বলে আর কঠিন কঠিন কি সব গান গাইতো বলে, মা গান গাইতে বসলেই বিরক্ত করতাম, ও মা আর কটা গান গাইবে বলে বলে। কাল গুটিগুটি গিয়ে হাজির হয়েছি ফের, এলোমেলো রিড টিপছি। ছোটবেলায় মা কয়েকটা গান টান তুলিয়েছিলো, সব বেবাক ভুলে গেছি। মা আবার শেখাচ্ছে, যে পরিমান বিরক্ত নিয়ে মাকে হোয়াট্যাপ আর নেট শেখাই তার ডাবল ভালোবাসা নিয়ে একই জিনিস বারবার করে দেখাচ্ছে। আমি শেষমেশ রনে ভঙ্গ দিয়ে মায়ের কোলে ছেতরে পরে, একটু মাথার চুল টেনে দাও।
আমি গানের কাজ ফাজ বুঝিনা, মান্নার থেকে হেমন্তের উদাস ভঙ্গী আমায় টানে বেশী। হঠাৎ হঠাৎ পুরোনো গান শুনতে ইচ্ছে করে মাঝে মাঝে। ল্যাপটপে হেমন্ত 'রাঙা যে গো দূর আকাশের ওই যে অস্তরাগ', মা এর পুরোনো গল্প পায়, মামারা মা মাসিরা মিলে যখন বসত, মেজোমামার এই গানটা ছিলো, বড়মামার অলিরও কথা শুনে।
তারপর সকালবেলা ঘুম ভাঙে, জ্বরের শেষের সূর্য্য ধোয়া ঘর। লাফিয়ে লাফিয়ে ঘোষণা, মা আজ আর আমার জ্বর নেই দেখো আজ আপিস যাবো।
সব্বাই বারণ করবে, লাফিয়ে লাফিয়ে সিঁড়ি নামতেও পারা যাচ্ছে না তবু বেরিয়েই বড্ড ভাল্লাগে, দুদিনের ঘরবন্দীতেই পাগল পাগল অবস্থা হয়েছিল। কত কিছু চাই আমরা, কত না পাওয়া নিয়ে অস্থির হই, এই সব ছোটখাটো জ্বরজারি বুঝিয়ে দেয় ওই যে বারান্দায় আমার লাগানো গাছে চড়াই পাখির কিচমিচ, কার্নিশে গর্বিত পায়রার চলন, আপিস যাওয়ার রাস্তাটা, ওই যে ধূ ধূ মাঠ, আড্ডা আদর আবদার এ বড় কম নয়....বেঁচে থাকা ইজ নট দ্যাট ব্যাড।
তোমার লেখা পড়ে মনে হচ্ছে, ইস কতদিন জ্বর হয়নি। খুব ভালো হয়েছে এটা, প্রদীপ্ত। জ্বর সেরে যাক এই কামনা করি।
ReplyDeleteহ্যাঁ মাঝে মাঝে জ্বর ভালো :).... আমি সেরে গেছি 😊
Deletelong drive long drive , ei lekhar uttar e ekta bishaaaaaaaal alingan , proud of you darlington tintin
ReplyDelete-_- ডার্লিংটন কেমন টনটন ওজনের মতো শুনতে
Deleteথ্যাঙ্গিউ :)