শীত পড়ছেনা শীত পড়ছেনা করে রোজী আক্ষেপ শুনি বাড়ি থেকে। শীত কালের যে কি সুখ কি জানি বাপু। হাজার খানা সোয়েটার কম্বল জড়িয়ে বসে থাকা। ব্রাশ করা থেকে শুরু করে বাড়ি ফিরে হাত মুখ ধোয়া তক , হাড় দাঁত সব্বাইকে ব্যতিব্যস্ত করে তোলা! শীতকাতুরে যারা প্রেম করে তাদের কি সমস্যাতাই না হয়! প্রেমিকার সামনে মাফলার জড়িয়ে দাড়ানোর মতো বুকের পাটা আর কজনেরই বা হয়। আহারে তারা নিগ্ঘাত বাড়ি ফিরে হেঁচে কেশে একাকার হয়। এছাড়া বাইক চালানোর সময় হেলমেট খুলে কেত মারার উপায় নেই , বারান্দায় দাঁড়িয়ে ফুকবে সে যো নেই। এর চেয়ে মশাই গরম কাল ঢের ভালো। আহা ফুরফুরে হওয়ায় উড়তে উড়তে বাইক চালানো , ইচ্ছে হলেই জল খেতে পারা( দাঁত থেকেহাড় ঠান্ডা হওয়ার ভয় না করে) ইত্যাদি ইত্যাদি। তবে হাঁ শীতকালের মরশুটির কচুরি , নলেনগুড় দিয়ে পিঠে , ইত্যাদি সুখাদ্যের সমাহার হয়, বইমেলা হয়। তাই শীতকালটা সওয়া যায় কষ্টমষ্ট করে। তবে এসবই দেশের কথা। এখানে তো শীতকাল মানে ঘরবন্দি। ঘুরতে যাওয়া যাবে না , হাঁটতে যাওয়া যাবে না , দূর দূর।
তাই অনন্যাদি যখন ডাকলেন ওনার বাড়ি ঘুরে যাবার জন্য আমি তো শুধু খাড়া না রেডি স্টেডি গো বলে ছুটবার জন্য প্রস্তুত। ফ্রন্টিয়ার ডিলটাও দিচ্ছিলো ভালোই মোটামুটি। এই সুত্রে একটা কথা বলে রাখা ভালো , এই অনন্যাদি আর অরুনাংশুদা , এনারা দুজনেই অসম্ভব ভালো দুজন মানুষ , আগের বার এনাদের ওখানে গিয়েছিলাম গল্পটা লেখা হয়নি। আমার ব্লগটা হলো দুধ ভাত টাইপ ব্লগ , নির্দিষ্ট পাঠক নেই , কেউ আদৌ পরে কিনা কে জানে তাই না লিখলেও কোনো ক্ষতিবৃদ্ধি হয়নি। তাই আমার মতো আলসে মানুষের লেখার কন্টিনিউইটি বজায় থাকে না। প্রায় দুবছর হতে চললো আমি দেশ ছাড়া। তবে ২০১৫ সালে আমি যা পেয়েছি তা অভাবনীয়। তারমধ্যে এই দুজন মানুষের সাথে পরিচিত হওয়া একটা ঘটনা তো বটেই। সব মানুষ তো সমান হয়না, কেউ গোলাপফুল ফোটায় কেউ খালি কাঁটা গাছ হয়ে থাকে। আমি মানুষ হিসেবে ওই কাঁটা গাছ শ্রেনীর। লতানে তাও আবার। তা আমার মতো স্বল্প বুদ্ধি , স্বল্প সাহসওলা কুকড়ে মানুষগুলো যে করে কর্মে খাচ্ছে, তার কারণ ওই অনন্যাদিদের মতো মানুষরা আছেন বলে। একটু বেশি ব্যক্তিগত কথাবার্তা হয়ে যাচ্ছে বোধহয় , বোরিং , কিন্তু আমার ঘুরতে যাওয়ার গল্পও তো ব্যক্তিগতই।
তো যাক যা বলছিলাম , ফ্রন্টিয়ার এর ক্যারি অন লাগেজেও টাকা লাগে। খালি একটা ব্যাকপ্যাক নিতে দেয়। তা আমার মতো ভবঘুরে মানুষের তাতে হয়ে যায়। একটু চাপাচাপি করতে হয়নি তা নয় তবে সেটা ম্যানাজ করা যায়।
কোথাও যাওয়ার নাম শুনলে মনটা এমন হয়ে যায় অফিসের কাজকম্ম মোটামুটি ডকে উঠে যায়। তার জন্য আমায় ফাঁকিবাজ বললে কি আর করা। ২৪ তারিখ ওই একটা ব্যাকপ্যাকে হয়ে যাবার যে কেতটা নিলাম একটু আগে , তার ফল টের পেলাম। আমাদের একটা ইংরাজি গপ্পো টাইপ ছিলো।প্যাকিং নাম ছিলো তার। একদম সেই কেস! যাই হোক ২৫তারিখ ভোর ভোর উঠে এক কাপ কফি বানাতে বানাতে আমার বন্ধুকে কল করলাম , তা সে উঠে পরেছিল ,যাই হোক ধরাচুড়ো পরে রওনা হলাম। সিকিউরিটি লাইন এ কত কিসিমের মানুষ দেখা যায়। একজনকে দেখি কোট প্যান্ট পরে পায়ে চপ্পল , কেউ কেউ এই ঠান্ডাতেও হাফ প্যান্টুলুন পরা! ডেনভার এয়ারপোর্ট এ যতবার আসি টার্মিনাল টু টার্মিনাল সাবওয়ে ট্রেনটা খুব উপভোগ করি। ট্রেনএর একদম সামনের কামরায় উঠলে সামনেটা বোঝা যায় , সাবওয়ে সারফেস বা টেম্পল রান এর জগতে ঢুকে পরেছি মনে হয় আর তারপরেই টার্মিনাল চলে আসে। সিকউরিটি পেরিয়ে এক কাপ কফি নিয়ে বসা গেলো জুত করে।
বাইরে তখন আলো ফুটছে সবে। পাশের আইলে ছোট্ট একটা কুকুর সহযাত্রী। বড়দিন বলে পাইলট থেকে এয়ার হোস্টেস মাথায় লাল টুপি। দিনটা বড় করেই শুরু হচ্ছ।কফির কাপে ছোট্ট চুমুক, আর ঘর থেকে বেড়িয়ে পরার আনন্দ।
আমার বাস ছিলো ওয়াশিংটন ডিসির ইউনিয়ন স্টেশন থেকে। হ্যারিসবার্গ অব্দি।একটু চিন্তা ছিল। ফ্লাইট দেরী করলেই তো চিত্তির। উবের বা লিফট নেব ভেবেছিলাম। তাও , অনেকসময়েই ওরা দেরী করে দেয় খুব. যাই হোক সময়ের অনেক আগেই পৌঁছে গেলাম। হাতে সময় ছিল তাই ইউনিয়ন স্টেশনটা ঘুরে। বেশ বড় টার্মিনাস। Amtrak এর ট্রেন ছাড়ে। নিউয়র্ক , বস্টন , পেনসিলভেনিয়া নানান জায়গার যাবার বাস আছে। খিদে পেয়েছিল বেশ , খাবার দোকানও ছিল। (অনেকগুলো অবশ্য ২৫ বন্ধ ছিলো ) , আমি একটা ষ্টারবাকস দেখে এক কাপ কফি নিয়ে ঘুরতে ঘুরতে দেখি লাইব্রেরী !! আর সেখানে থেকে তুমি খুশি মতো বই নিয়ে নাও। আর তোমার কাছে এক্স্ট্রা বই থাকলে দিয়ে দাও। ভাবা যায়! এ জিনিস দেখে নড়ার সাধ্য রইলো না, খিদে বাবাজীবন সারা রাস্তা তার শোধ নিয়েছিল অবশ্য় ।
ওয়াশিংটন ডিসির সাথে আমার বৃষ্টির একটা সম্পর্ক আছে। আগেরবার এসেছিলাম যখন তখন এরকম আকাশ ভাংগা বৃষ্টি নেমেছিল। সেই বৃষ্টি ভিজে শহর দেখার গল্প করেছি অন্যজায়গায় । এবারে বৃষ্টি বাল্টিমোর থেকে শুরু হয়েছে। ওয়াইপার পাগলের মতো মাথা নেড়ে চলেছে, ভিজতে পারছিনা বটে তবে ভেজা হাইওয়ে শচিন কর্তা, সুমন , রফি , হেমন্ত এর গান (বাসে wifi আর প্লাগ পয়েন্ট দুইই ছিলো ) সব মিলিয়ে অসাধারণ লাগছিল।
দুবার হল্ট দিয়ে শেষ মেষ বাস পৌঁছলো যখন আমি তখন কাহিল প্রায়। (চলবে)
তাই অনন্যাদি যখন ডাকলেন ওনার বাড়ি ঘুরে যাবার জন্য আমি তো শুধু খাড়া না রেডি স্টেডি গো বলে ছুটবার জন্য প্রস্তুত। ফ্রন্টিয়ার ডিলটাও দিচ্ছিলো ভালোই মোটামুটি। এই সুত্রে একটা কথা বলে রাখা ভালো , এই অনন্যাদি আর অরুনাংশুদা , এনারা দুজনেই অসম্ভব ভালো দুজন মানুষ , আগের বার এনাদের ওখানে গিয়েছিলাম গল্পটা লেখা হয়নি। আমার ব্লগটা হলো দুধ ভাত টাইপ ব্লগ , নির্দিষ্ট পাঠক নেই , কেউ আদৌ পরে কিনা কে জানে তাই না লিখলেও কোনো ক্ষতিবৃদ্ধি হয়নি। তাই আমার মতো আলসে মানুষের লেখার কন্টিনিউইটি বজায় থাকে না। প্রায় দুবছর হতে চললো আমি দেশ ছাড়া। তবে ২০১৫ সালে আমি যা পেয়েছি তা অভাবনীয়। তারমধ্যে এই দুজন মানুষের সাথে পরিচিত হওয়া একটা ঘটনা তো বটেই। সব মানুষ তো সমান হয়না, কেউ গোলাপফুল ফোটায় কেউ খালি কাঁটা গাছ হয়ে থাকে। আমি মানুষ হিসেবে ওই কাঁটা গাছ শ্রেনীর। লতানে তাও আবার। তা আমার মতো স্বল্প বুদ্ধি , স্বল্প সাহসওলা কুকড়ে মানুষগুলো যে করে কর্মে খাচ্ছে, তার কারণ ওই অনন্যাদিদের মতো মানুষরা আছেন বলে। একটু বেশি ব্যক্তিগত কথাবার্তা হয়ে যাচ্ছে বোধহয় , বোরিং , কিন্তু আমার ঘুরতে যাওয়ার গল্পও তো ব্যক্তিগতই।
তো যাক যা বলছিলাম , ফ্রন্টিয়ার এর ক্যারি অন লাগেজেও টাকা লাগে। খালি একটা ব্যাকপ্যাক নিতে দেয়। তা আমার মতো ভবঘুরে মানুষের তাতে হয়ে যায়। একটু চাপাচাপি করতে হয়নি তা নয় তবে সেটা ম্যানাজ করা যায়।
কোথাও যাওয়ার নাম শুনলে মনটা এমন হয়ে যায় অফিসের কাজকম্ম মোটামুটি ডকে উঠে যায়। তার জন্য আমায় ফাঁকিবাজ বললে কি আর করা। ২৪ তারিখ ওই একটা ব্যাকপ্যাকে হয়ে যাবার যে কেতটা নিলাম একটু আগে , তার ফল টের পেলাম। আমাদের একটা ইংরাজি গপ্পো টাইপ ছিলো।প্যাকিং নাম ছিলো তার। একদম সেই কেস! যাই হোক ২৫তারিখ ভোর ভোর উঠে এক কাপ কফি বানাতে বানাতে আমার বন্ধুকে কল করলাম , তা সে উঠে পরেছিল ,যাই হোক ধরাচুড়ো পরে রওনা হলাম। সিকিউরিটি লাইন এ কত কিসিমের মানুষ দেখা যায়। একজনকে দেখি কোট প্যান্ট পরে পায়ে চপ্পল , কেউ কেউ এই ঠান্ডাতেও হাফ প্যান্টুলুন পরা! ডেনভার এয়ারপোর্ট এ যতবার আসি টার্মিনাল টু টার্মিনাল সাবওয়ে ট্রেনটা খুব উপভোগ করি। ট্রেনএর একদম সামনের কামরায় উঠলে সামনেটা বোঝা যায় , সাবওয়ে সারফেস বা টেম্পল রান এর জগতে ঢুকে পরেছি মনে হয় আর তারপরেই টার্মিনাল চলে আসে। সিকউরিটি পেরিয়ে এক কাপ কফি নিয়ে বসা গেলো জুত করে।
বাইরে তখন আলো ফুটছে সবে। পাশের আইলে ছোট্ট একটা কুকুর সহযাত্রী। বড়দিন বলে পাইলট থেকে এয়ার হোস্টেস মাথায় লাল টুপি। দিনটা বড় করেই শুরু হচ্ছ।কফির কাপে ছোট্ট চুমুক, আর ঘর থেকে বেড়িয়ে পরার আনন্দ।
আমার বাস ছিলো ওয়াশিংটন ডিসির ইউনিয়ন স্টেশন থেকে। হ্যারিসবার্গ অব্দি।একটু চিন্তা ছিল। ফ্লাইট দেরী করলেই তো চিত্তির। উবের বা লিফট নেব ভেবেছিলাম। তাও , অনেকসময়েই ওরা দেরী করে দেয় খুব. যাই হোক সময়ের অনেক আগেই পৌঁছে গেলাম। হাতে সময় ছিল তাই ইউনিয়ন স্টেশনটা ঘুরে। বেশ বড় টার্মিনাস। Amtrak এর ট্রেন ছাড়ে। নিউয়র্ক , বস্টন , পেনসিলভেনিয়া নানান জায়গার যাবার বাস আছে। খিদে পেয়েছিল বেশ , খাবার দোকানও ছিল। (অনেকগুলো অবশ্য ২৫ বন্ধ ছিলো ) , আমি একটা ষ্টারবাকস দেখে এক কাপ কফি নিয়ে ঘুরতে ঘুরতে দেখি লাইব্রেরী !! আর সেখানে থেকে তুমি খুশি মতো বই নিয়ে নাও। আর তোমার কাছে এক্স্ট্রা বই থাকলে দিয়ে দাও। ভাবা যায়! এ জিনিস দেখে নড়ার সাধ্য রইলো না, খিদে বাবাজীবন সারা রাস্তা তার শোধ নিয়েছিল অবশ্য় ।
ওয়াশিংটন ডিসির সাথে আমার বৃষ্টির একটা সম্পর্ক আছে। আগেরবার এসেছিলাম যখন তখন এরকম আকাশ ভাংগা বৃষ্টি নেমেছিল। সেই বৃষ্টি ভিজে শহর দেখার গল্প করেছি অন্যজায়গায় । এবারে বৃষ্টি বাল্টিমোর থেকে শুরু হয়েছে। ওয়াইপার পাগলের মতো মাথা নেড়ে চলেছে, ভিজতে পারছিনা বটে তবে ভেজা হাইওয়ে শচিন কর্তা, সুমন , রফি , হেমন্ত এর গান (বাসে wifi আর প্লাগ পয়েন্ট দুইই ছিলো ) সব মিলিয়ে অসাধারণ লাগছিল।
দুবার হল্ট দিয়ে শেষ মেষ বাস পৌঁছলো যখন আমি তখন কাহিল প্রায়। (চলবে)
Erpor kothai ghurte jabi?
ReplyDeletedekhi :) ..beriye porlei hoy
DeleteBah bah... likhis na keno regular?
ReplyDeletepore na keu tai utsah kom :D
Deleteiss etodin dekhini keno ke jane, bookmark kore rakhlam
ReplyDeleteP.S. lekha ta je durdanto hoyeche seta na bolleo chole...
onek dhonyobad Saugata Da :)
Delete