এক দিনে ৪ ঋতু দেখার অভিজ্ঞতা হয়ে গেল। বলেছিলাম না কলোরাডোর আবহাওয়ার মাথার দোষ আছে, তা এইবার ঘুরতে হিয়ে আরো ভালো করে প্রমান করে দিলো। সকালে বৃষ্টি, তারপর স্নো শাওয়ার ,মাঝে একবার গরমকালের মতো রোদ তারপর শরতকালের আকাশ আবার বৃষ্টি , কিংবা মেঘ নেমে আসা আকাশ ।
লং উইকেন্ডে বাড়িতে বসে থাকার ইচ্ছে ছিল না মোটেও, যাবার জায়গার অভাব নেই কিন্তু লম্বা ছুটিতে দুরে কথাও যাবারই ইচ্ছে হচ্ছিল। এখন আমি নতুন গাড়ি চালাতে শিখেছি বলে বাকিদের আমার উপর তেমন ভরসা নেই। আমার নিজের অবিশ্যি আছে। কিন্তু ভিতু আরোহী নিয়ে গাড়ি চালানোর মত ভরসা আমার নেই, প্রতি মুহুর্তে মনে হবে এই বুঝি কিছু ছড়ালাম। তাছাড়া বিয়ে শাদী করে থিতু হওয়া লোকেদের ভয়টা একটু বেশী হয়। তাই আমি চালাবনা ধরে নিয়ে ভাবনা চিন্তা করে ঠিক হলো মোটামুটি বাড়ির টি ৫ ঘন্টা গাড়ি চালিয়ে যাব যাবে এরকম দূরত্বে যাবার জায়গায় যাওয়া হবে। কলোরাডোর পাশের স্টেট হলো Utah , ওখানে যাবার প্ল্যান প্রথমে করিনি। প্রথমে ঠিক হলো ব্ল্যাক ক্যানিয়ন এবং কলোরাডো মনুমেন্ট বলে দুটো জায়গায় যাব। ছবিতে দেখে দুটো জায়গায়ই ভারী চমত্কার লেগেছিল। বেড়াতে যাবার আগের আলোচনা গুলো দারুন হয়. নানারকম জিনিস করার সখ হবে কিন্তু পকেট এবং আরো সব কিছু ভেবে কাটছাট হবে, কোনো কিছুই ফাইনাল না হয়ে , চা এবং টা উড়ে যাবে এবং আবার পরের দিন বসা হবে।
তো যাই হোক এইসব করে আমাদের মোটামুটি একটা প্ল্যান দাঁড় করানো গেল, একদিন স্যান্ড ডিউনস , একদিন ব্ল্যাক ক্যানিয়ন আর একদিন কলোরাডো মনুমেন্ট যাব, মানে ছুটি এবং গাড়ি দুটোকেই যতটা পারা যায় ব্যবহার করা আর কি। কিন্তু যাবার আগের সপ্তাহ থেকে এমন আকাশ এর মুখ ভার হলো আমরা তো বেশ চিন্তায় পরে গেলাম। এখানকার আবহাওয়ার ফোরকাস্ট বেশ নির্ভরজনক , তাই খানিকটা দমে গেছিলাম। কিন্তু বাড়িতে বসে থাকার মন নেই, তাই ক্যানসেল না করে অন্য কোনো উপায় ভাবনাচিন্তা করছি, অফিসে বাড়িতে। এদিকে আবহাওয়াটাও মজা নিচ্ছে। ধর রাতে দেখলাম শনিবার ব্লাক ক্যানিয়ন এ বৃষ্টির সম্ভাবনা, তাই আমরা ঠিক করলাম ওই দিন মনুমেন্ট তা ঘুরে আসা যাক. তা পরের দিন দেখি ফোরকাস্ট বদলে গেছে। শনিবার মনুমেন্ট এ আবহাব ভালো। এরকম তো নাজেহাল করলেও আমরা না দমে বেরিয়ে পরা গেলো।ওই স্যান্ড ডিউনসটা বদলে খালি আর্চেস ন্যাশনাল পার্ক করেছিলাম।
সাকুল্যে ঘন্টা পাঁচেক এর রাস্তা হলে কি হবে আমরা খাবার তুলেছিলাম মোটামুটি বড় রোড ট্রিপ এর মতই. তার প্রধান কারণ আমরা প্রত্যেকেই জিভে প্রেম করি, আর দ্বিতীয় কারণ হলো এইধরনের ন্যাশনাল পার্ক গুলোয় আগের অভিজ্ঞতা থেকে জানি ভিতরে খাবার দাবার পাব না, আর খাবার জন্য মাঝপথে বেরোনো বোকামো। তাই আগের শুক্রবার বিকেলে গাড়ি তুলে প্রচুর মাফিন,কাপকেক, ক্রোসা,বিস্কুট,ফলমূল নিয়ে খাবো বলে ইয়ে থুড়ি যাব বলে রেডি।
সকালেও বেরোনোর সময় দেখি বৃষ্টি পরছে সমানে। আবার প্ল্যান চেঞ্জ। ওয়েদার চ্যানেল এর সাইটের আপডেট অনুযাই ব্ল্যাক ক্যানিয়নই যাওয়া যাক আগে।
সকালেও বেরোনোর সময় দেখি বৃষ্টি পরছে সমানে। আবার প্ল্যান চেঞ্জ। ওয়েদার চ্যানেল এর সাইটের আপডেট অনুযাই ব্ল্যাক ক্যানিয়নই যাওয়া যাক আগে।
আসে পাশে কিছু খামার বাড়ি, ঘোড়া চরে বেড়াচ্ছে। বাঁক হীন চওরা রাস্তা। খানিকক্ষণের মধ্যেই দেখি রাস্তার ভোল বদলে গেছে, বরফ ঢাকা দুধার আর তারপরেই শুরু হলো বৃষ্টি, তারপর বৃষ্টির তা বদলে গেলো তুষারবৃষ্টিতে। চিন্তা হচ্ছে বেশ কিজানি ব্ল্যাক ক্যানিয়নএ পৌঁছে কি খেল দেখাবে।
একটু পরে যখন আবার খটখটে রোদ বেরোলো দেখি আমরা একটা লেকের ধার ধরে যাচ্ছি। জল দেখলে আমি তো এমনিই কেমন হয়ে যাই। পাহাড়ের কলে নীল্ জল, আহা প্রানটা জুড়িয়ে যায়। দাড়ানো হলো ছবি তোলা হলো। একটি মেয়ে পিঠে ব্যাগ ঝুলিয়ে যাচ্ছিল কোথায় যেন, আমাদের দেখে নিজে থেকেই এগিয়ে এলো গ্রুপ ফোটো তুলে দেবে। সে আসলে অন্য স্টেট এর অন্য পার্ক এর রেঞ্জার, এখানে সম্প্রতি এসেছে।
আমরা ব্ল্যাক ক্যানিয়ন পৌছনোর খানিক আগে একটা ছোট পাহাড়ি নদীর পাশে খানিটা সময় থেমেছিলাম। নদীর পাড় ধরে খানিকটা এগোনো গেলো। ছোট্ট নদী হলে কি হয়, স্রোত খুব,লোকে রাফটিং করতে নেমেছে। এখানে এরা ঘোরে বেশ গুছিয়ে। বোট বেঁধে নিয়ে আসে গাড়ির সাথেই। তারপর বাপ ব্যাটা নেমে পরে জলে।
ব্ল্যাক ক্যানিয়ন মানে মোদ্দা কথায় যে গিরিখাতটার পাহাড়টা কালোকোলা দেখতে । যেমন কিনা ওখানেই আর্টিস্ট পয়েন্ট বলে একটা জায়গা আছে যেটা ই প্রাকৃতিক ভাবে মনে হবে কেউ তুলির আঁচর কেটেছে।
একটু পরে যখন আবার খটখটে রোদ বেরোলো দেখি আমরা একটা লেকের ধার ধরে যাচ্ছি। জল দেখলে আমি তো এমনিই কেমন হয়ে যাই। পাহাড়ের কলে নীল্ জল, আহা প্রানটা জুড়িয়ে যায়। দাড়ানো হলো ছবি তোলা হলো। একটি মেয়ে পিঠে ব্যাগ ঝুলিয়ে যাচ্ছিল কোথায় যেন, আমাদের দেখে নিজে থেকেই এগিয়ে এলো গ্রুপ ফোটো তুলে দেবে। সে আসলে অন্য স্টেট এর অন্য পার্ক এর রেঞ্জার, এখানে সম্প্রতি এসেছে।
আমরা ব্ল্যাক ক্যানিয়ন পৌছনোর খানিক আগে একটা ছোট পাহাড়ি নদীর পাশে খানিটা সময় থেমেছিলাম। নদীর পাড় ধরে খানিকটা এগোনো গেলো। ছোট্ট নদী হলে কি হয়, স্রোত খুব,লোকে রাফটিং করতে নেমেছে। এখানে এরা ঘোরে বেশ গুছিয়ে। বোট বেঁধে নিয়ে আসে গাড়ির সাথেই। তারপর বাপ ব্যাটা নেমে পরে জলে।
ব্ল্যাক ক্যানিয়ন মানে মোদ্দা কথায় যে গিরিখাতটার পাহাড়টা কালোকোলা দেখতে । যেমন কিনা ওখানেই আর্টিস্ট পয়েন্ট বলে একটা জায়গা আছে যেটা ই প্রাকৃতিক ভাবে মনে হবে কেউ তুলির আঁচর কেটেছে।
পরের দিন গন্তব্য আর্চেস ন্যাশনাল পার্ক। আমরা যে মোটেলটাতে ছিলাম সকালে ব্রেকফাস্ট ইনক্লুড ছিল , মানে সেটা দেখেই নিয়েছিলাম আর কি। সকাল সকাল উঠে বেরোতে হবে , তাই সকালে খাবার সময় খুব বেশি ছিল না, কারণ অর্চেস ন্যাশনাল পার্ক এর ওয়েবসাইট এ সাবধানবাণী ছিল যদি ৮টার মধ্যে না আসতে পারো তবে কপালে দুঃখ আছে। আর্চেস ন্যাশনাল পার্কটার বিশেস্বত্ব হলো লাল পাথরের স্বাভাবিক আর্চ। এই লাল পাথর গুলোর উপর সূর্যের আলো এত মায়াময় হয় যে সকাল বেলা থেকেই প্রচন্ড ভিড় হয়ে যায়, আর এন্ট্রান্সটা ফ্রীওয়ে এর মুখেই হওয়ায় ফ্রীওয়ে তে জ্যাম এড়াতে পার্কে ঢোকা বন্ধ করে দেওয়া হয়। আমরা তো ঢোকার মুখেই বাধা পেলাম। মামারা দাড়িয়ে আছে আর সমানে ইশারা করছেন যাও যাও এগিয়ে যাও ঢোকা যাবেনা। যত্পরনস্তি হতাশ। সাতসকালে উঠে ভালো করে ব্রেকফাস্ট না করেই এত কষ্ট করে আসাটা এরকম বেকার হয়ে যাবে! তবে সত্যি কথা বলব আমার কিন্তু ওই ড্রাইভ তাও বেশ লেগেছিল। ধূ ধূ মাঠ, টেবিল ল্যান্ড পাহাড়, "নো সার্ভিস ইন নেক্সট ১০ মাইল" বোর্ড তাছাড়া ঠিক সময়ে পার্ক এ ঢুকতে পারব কিনা সেই উত্তেজনা, সব মিলিয়ে ভারী চমত্কার একটা সকাল। গন্তব্যটা আমার কাছে কোনো সময়েই তত গুরুত্বপূর্ণ হয়না যে চলার পথের সৌন্দর্যকে উপেক্ষা করে যাব।
যাই হোক আমরা বেশ কয়েকবার পাক মারব ভাবলাম, যদি খোলা পাই। এখন এদেশের ফ্রীওয়ে গুলোয় তো ইচ্ছে মত গাড়ি ঘোরানো যায়না। ফলে বেশ খানিকটা পিছিয়ে এবং এগিয়ে যাবার পর দেখলাম আমাদের তেল মোটামুটি শেষের দিকে। তেলটা ভরে নেওয়া দরকার। তেল ভরে ফিরে দেখলাম রাস্তা ফাঁকা , মামারা সরে গেছে। ব্যাস আর কি চল চল.....
যাই হোক আমরা বেশ কয়েকবার পাক মারব ভাবলাম, যদি খোলা পাই। এখন এদেশের ফ্রীওয়ে গুলোয় তো ইচ্ছে মত গাড়ি ঘোরানো যায়না। ফলে বেশ খানিকটা পিছিয়ে এবং এগিয়ে যাবার পর দেখলাম আমাদের তেল মোটামুটি শেষের দিকে। তেলটা ভরে নেওয়া দরকার। তেল ভরে ফিরে দেখলাম রাস্তা ফাঁকা , মামারা সরে গেছে। ব্যাস আর কি চল চল.....
দারুণ লাগল পড়ে, প্রদীপ্তা। ছবি তো বরাবরের মতোই চমৎকার। তুমি এত বেড়াতে ভালোবাস দেখে কী যে ভালো লাগে। তোমার ছবিটা খুব সুন্দর হয়েছে।
ReplyDeleteThank you Kuntala Di :)
Deleteআরে আর্চিসের লেখাটাও add কর, আর আন্দামান ভ্রমণ নিয়ে লেখা চাই।
ReplyDeleteবেশ বেশ অ্যাডাচ্ছি....আর আন্দামানের একটা লেখা দিয়েছি আরেকটা জয়ঢাকে আসছে বর্ষায় 😊
Delete