মেট্রোপলিটন মিউজায়াম টা সত্যি দারুন। মানে ওই মার্ক টোয়েন এর লাইব্রেরির মতো। আমেরিকার ইতিহাসতো খুব পুরনো কিছু না , আর ওদের নিজস্ব শিল্প কলাও কিছু বিশেষ উল্লেখযোগ্য না কিন্তু সারা বিশ্ব থেকে জোগাড় করে যা বানিয়েছে তা সত্যি দেখার মত। এমনকি একটা আস্ত মন্দির অব্দি তুলে এনেছে!
ইজিপ্সিয়ান কালেকশন টা দেখতে দেখতেই সময় কেটে যাবে। মিশর আমার বেশ রহস্যময় লাগে, কিসব কান্ড করেছিলো সেই কত্তদিন আগে!
 |
এমনি করে ঝগড়া করতো |
 |
এইটা কি করছে একদম বুঝতে পারিনি, লেখা ছিল বটে দূর অত পড়া যায় নাকি! |
 |
মমি করে রাখবে বলেছিলো , তাই মুখটা কেমন হয়ে গেছে :( |
 |
এই ভাবেই মমি করতো , ব্যাস আর কি সব লেগে পরো |
 |
রাগের ধরনটা অবশ্য এখনো একই রয়ে গেছে |
আমার অবশ্য ছবির ব্যাপারে জ্ঞান্গম্মি বড়ই কম, তাই ওদিকটা খুব বেশি সময় দেবোনা জানি, এমনকি ইউরোপিয়ান কালেকশন এ যে সব ভাস্কর্য দেখে লোকে আহা বাহ বলে আমি সেগুলো তেমন বুঝি না. খালি একটা মূর্তি খুব নাড়া দিয়েছিল। রোমান ভাস্কর্য। একজন লোককে তার ছেলে এবং নাতি সমেত একটা ঘরে আটকে রেখে দিয়েছিল। হয় উপোস নয় কানিবালিজম। মুর্তিগুলো দেখে আর লেখাটা পরে আমার টিফিন বাক্স আর খোলা হলো না।
 |
:( |
অস্ত্র-শস্ত্র আমায় খুব টানে। নিজে খুব একটা বীর নয় তো ,তাই চোখ বুজে অসি ঝনঝনাই। কত্তরকমের পিস্তল। একা একা ঘোরা বোরিং হতে পারে কিন্তু একা একা ঘুরলে অনেক কিছু দেখা যায় চোখ খুলে আর চোখ বুজে। যেমন ওই পিস্তল গুলো দেখে তারিনী খুড়োর ডুয়েল এর কথা মনে পরে গেলো। এক মুহূর্তে আমি বিশ্বের অন্যতম ব্যস্ত শহর থেকে লখনৌ এর একটা ভোর বেলায় পৌঁছে গেলাম।
ফিরতে সময় বেশি লাগলো না অবশ্য , কারণ পেটের মধ্যে ছুঁচো গুলো ডুয়েল লড়তে শুরু করে দিয়েছে। বেশিক্ষণ মিউজিয়াম এ থাকলে কান কট কট , পা মোচর ইত্যাদি নানা উপসর্গ দেখা দিতে পারে। তাই বেড়িয়ে পরলাম সেখান থেকে।
১১-১২ এ পড়তে কেষ্টপুর যেতাম টিউশন পড়তে, তো বাগুইআটি থেকে কেষ্টপুর বাসের পাদানি তে চড়ে যেতাম , আর ওই পয়সাটা দিয়ে বিকেলে ঘুগনি বা আলুরদম খেতাম। এদের দোতলা বাস গুলো ভালো কিন্তু পাদানিতে চড়ে যাওয়া দূর একটা স্টপেজে যাওয়া যায়না , পুরো দিনের টিকেট কেটে সব কটা দ্রষ্টব্য স্থান ঘুরতে হবে। জঘন্য ব্যপার।
আমার এক বন্ধু অফিস ফেরতা আসবে , দুজনে মিলে টাইমস স্কোয়ার আর সেন্ট্রাল পার্ক যাব একা একা এই দুজায়গায় অন্তত ঘুরে মজা নেই তেমন। যে কোনো শহরের রাস্তায় হেঁটে বেড়ানোর একটা আলাদা মজা আছে। কত কিসিমের মানুষ দেখা যায়, কতরকম নতুন জিনিস পত্র দেখা যায়। আর একটা জিনিস, ভালো লোকের সংখ্যা যে কত তাও টের পাওয়া যায়। যেমন মেট্রোপলিটান মিউজিয়াম থেকে বেরিয়েই ঝমঝমিয়ে বৃষ্টি শুরু হলো। ছাতার ব্যবহার আমার মোটামুটি অজানাই বলা যায়। ঠিক সামনেই একটা হট হগ ষ্টল ছিল, ভ্যাবলার মত ভিজতে দেখে স্টলওয়ালা তার স্টল এর নিচে দাঁড়াতে বললো ! এ জিনিস কলকাতার রাস্তাঘাটে হর হামেশাই হয় কিন্তু এমন কেতা ধারী শহরে এমন প্রস্তাব! ব্রুকলিন ব্রিজের সামনে কতকগুলো আফ্রো আমেরিকান রোড শো করছিল। আমি শুনেছি আমাদের দেশে গাঁয়ে নাকি এজিনিস দেখা যেত, তবে আমার কাছে নতুন। খান কতক ছেলে হেসে নেচে কুঁদে অভিনয় করার পর যখন টাকা চাব শুরু করলো, তার আগের ডায়লগ তা বেশ। "তোমরা ভাবছ হয়ত এইসব টেলেণ্টেড ছেলেপুলেরা এখানে কি করছে।.উমমহাঁ ঠিক ধরেছেন টাকার জন্য, তাই লজ্জা ত্যাগ করে একে ডলার দিন " ।
আমার খুবই ইচ্ছে ছিল সেন্ট্রাল পার্ক এ খানিকক্ষণ সাইকেল চালাবো , কিন্তু কি বলব মশাই। কি খোরাকটাই না হলাম। আমি আর আমার বন্ধুটা গেছি, দুটো সাইকেল নেব। দাম জিগ্গেস করায় বলল নাকি ও সস্তায় দেবে খুব আর বাচ্চার সাইকেলটা ফ্রি!! রেগে গিয়ে শিগগির চলে এলাম, লোকটা অবশ্য ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে গেছিল, বুঝলনা কেন রেগে গেলাম, ফ্রি শুনে তো লোকে খুশি হয়!

খুব খিদে পেয়েছে। পান -আহারের সন্ধান করতে হয়। এদিক সেদিক ঘুরে জিপিএস দেখে ৪কাছাকাছি যেখানে পৌঁছলাম , সম্ভবত জায়গাটাতে ফরাসী বেশি থাকে। মানিব্যাগ এর মায়া ত্যাগ করে এক বেশি কেতাওয়ালা রেস্টুরান্ট এই ঢুকেছি। এদেশে খাবার দাবার , বা পানাহারের জন্য বেশি কেতাওয়ালা জায়গায় যাবার দরকার পরেনা, মানে যেতে তো পারেনই , সে যাই হোক , নেহাত আমাদের খিদে পেয়েছিলো খুব। কি বলবো আর ইংরাজি যে অমন ফরাসী হয়ে যায় মেনুকার্ড না দেখলে বুঝতেই পারতাম না! কিচ্ছুটি বুঝতে না পেরে একখানা চিকেন লেখা আছে এরকম ডিশ অর্ডার দিলাম। অর্গানিক চিকেন নাম ছিল। অরগানিক মানে হেলদি চিকেন হবে ভেবেছি, এলো কিনা , কুমড়,বেগুন আর চিজ দিয়ে চিকেন!!! হাঁ রান্না নাই বা জানতে পারিস, আমিও জানিনা, তাই বলে কুমড়ো দিবি চিকেনে! অর্নবদার বাড়ি গিয়ে, বাঙালি মাছ খেয়ে তবে স্বস্তি, তার আগে অব্দি বাসএ ক্রমাগত স্বপ্ন দেখেছি, একটা মুরগী তার মুখটা কুমড়ো, আর সে বেগুন বিক্রি করছে....